থিংকিং লাইক অ্যা ট্র্যাভেলার, পরিব্রাজকের মত ভাবনা-কথাটা প্রথম শুনি আমি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাইন থিংকিংয়ের উপর একটি ক্লাসের ভিজ্যুয়ালে। আইডিইওর জেনারেল ম্যানেজার টম কেলি একথা বলেন। নতুন কিছু উদ্ভাবনের জন্য সবাইকে পাঁচটা অভ্যাস করার পরামর্শ দেয়ার সময় প্রথম পরামর্শ হিসেবে তিনি এ কথা বলেন-থিংক লাইক অ্যা ট্র্যাভেলার।
তো থিংকিং লাইক অ্যা ট্র্যাভেলার মানে কি?
আমরা যখন বিদেশে ঘুরতে চাই, তখন কি করি? বিদেশে ঘুরতে গেলে সব কিছুই খুটিয়ে খুটিয়ে খেয়াল করি আমরা। আমাদের মস্তিষ্ক তখন যা দেখে তাকেই মনে রাখে, চিনে ফেলে, গল্পের ছবি হিসেবে মনে রাখে। অন্য দেশে গেলে মানুষ কিভাবে চা খায়, কফি খায়, জুতার ফিতা পরে তার সবই আমরা খেয়াল করি, মনে রাখি। আর নিজ এলাকায় সারাদিন কেমন জানি একটা ঘোরের মধ্যে চলি আমরা, বাসা-অফিস কিংবা বাসা-ক্লাস, একটা ঘোরের মধ্যে চলাই যেন সব। আর অন্য জায়গায় ঘুরতে গেলে প্রতিটি সেকেন্ডই যেন আমরা মনে রাখার চেষ্টা করি। এমনকি রাঙামাটি ঘুরতে গেলেও কিন্তু আমরা প্রতিটিই সেকেন্ডই মনে রাখি। ডিজাইন থিংকিং নিয়ে যারা পড়াশোনা করেন তারা থিংক লাইক অ্যা ট্র্যাভেলার অভ্যাসটিকে গড়ে তোলেন সবার প্রথমেই।
কেন থিংকিং লাইক অ্যা ট্র্যাভেলার?
নতুন আইডিয়া কিভাবে আসে, এই প্রশ্নের গোড়ায় থিংক লাইক ট্র্যাভেলার্স সেন্স ব্যবহার করলে নাকি দারুণ কাজ হয়। বিষয়টা অনেকটা এই রকম, নতুন আইডিয়ার বেশির ভাগই আমাদের চোখের সামনে খুব সরল ভাবে কোন না কোন সমস্যার মধ্যে লুকিয়ে থাকে। একঘেঁয়ে জীবনের কারণে সেই সমস্যাগুলো নিয়ে ভাবনার সময় নেই আমাদের, ভাবনা যেহেতু নেই সেহেতু নতুন আইডিয়াও নেই; আছে শুধু কাট-কপি-পেষ্ট। পরিব্রাজকদের মত ভাবার অভ্যাসে সাধারণ সমস্যাগুলো থেকেই অসাধারণ সব আইডিয়া চলে আসে। ট্যাক্সি সার্ভিস উবারের শুরুর গল্পটা কিন্তু এই ধরণেরই। প্যারিসে ট্যাক্সি না পেয়ে ট্র্যাভিস কালানিক তো উবার তৈরির ধারণা পেয়ে যান।
যে কারণে থিংক লাইক ট্র্যাভেলার্স?
টম কেলি থিংক লাইক অ্যা ট্র্যাভেলার্স থিমে ওরাল-বি টুথপেস্টের একটা গল্প শেয়ার করেছিলেন। ওরাল-বি বাচ্চাদের জন্য টুথব্রাশ ডিজাইনে কি নতুন আইডিয়া আসতে পারে তা নিয়ে বিপত্তিতে পড়েছিল। বাচ্চাদের জন্য ব্রাশ চিকন হবে কলমের মত, না ছোট হবে-কি হবে? শেষে, দেখা গেল বাচ্চাদের ব্রাশ আঁকারে বড় হলেই তা বাচ্চাদের ব্যবহার উপযোগি হয় বেশি। পাঁচ বছরের বাচ্চাদের দাঁতব্রাশের স্টাইল দেখে এই ধারণা মিলেছিল।
প্রতিদিন একই ভাবে ভাবনার কারণে আমরা মাথায় এমন একটা মেকানিজম ডেভলপ করি যা কিনা নতুন আইডিয়া খুঁজতে অনিচ্ছুক হয়। কিন্তু, আপনি যদি থিংকিং লাইক ট্র্যাভেলার্স অভ্যাস আয়ত্ব করতে পারেন তাহলে প্রতিদিনকার সমস্যা থেকেই দারুণ থিংক খুঁজে পাবেন।
প্রতিদিন একই ভাবে ভাবনার কারণে আমরা মাথায় এমন একটা মেকানিজম ডেভলপ করি যা কিনা নতুন আইডিয়া খুঁজতে অনিচ্ছুক হয়। কিন্তু, আপনি যদি থিংকিং লাইক ট্র্যাভেলার্স অভ্যাস আয়ত্ব করতে পারেন তাহলে প্রতিদিনকার সমস্যা থেকেই দারুণ থিংক খুঁজে পাবেন।
No comments:
Post a Comment