Pages

Thursday, November 9, 2017

ডেলিভারিং হ্যাপিনেজ ( শেষ পর্ব ১৩ - ১৫ )



পর্ব-১৩ : ইয়্যু উইন সাম, ইয়্যু লস সাম-


আমার আর সঞ্জয়ের চাকরি হল ওরাকলে
আমার আরো অফার ছিল। তবে, ওরাকল যে কেবল সবচেয়ে বেশি টাকা দিচ্ছে তা নয়। বরং তারা আমাকে টাকা দিচ্ছে যাতে আমার কলেজ জীবনের সকল স্থাবর সম্পত্তি আমি ক্যালিফোর্নিয়ায় নিয়ে যেতে পারি। শুধু তাই নয়, আমাকে আর সঞ্জয়কে তারা বিনে পয়সায় তাদের কর্পোরেট হাউসিং- থাকতে দিয়েছে, নতুনদের প্রশিক্ষণ সময়কালটাতে। আর ১৯৯৫ সালে বার্ষিক ৪০ হাজার টাকা(ডলার!) একজন ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েটের জন্য নেহায়েতই কম নয়!
আমি অনুভব করলাম আমি সফল হয়েছি। কলেজের তো একটা উদ্দেশ্যই ছিল মোটা বেতনের চাকরি পাওয়া এবং আমি সেটা পেয়েছি। আমি আর সঞ্জয় আমাদের অন্যান্য রুমমেটদের সঙ্গে তুলনা করে দেখলাম কেও আমাদের মত বেতন পাচ্ছে না। তারমানে তাদের চেয়ে আমাদের আয় বরকত বেশিই হবে
কয়েক মাস পর। আমি আর সঞ্জয় ওরাকলের নতুনদের ট্রেনিং- যোগ দিলাম। এটি একটি তিন সপ্তাহের কোর্স। আমাদের সঙ্গে আরো ২০ জন নতুন গ্র্যাজুয়েট। তিন সপ্তাহ দ্রুত চলে গেল। এটি আসলে ছিল ডেটাবেস প্রোগ্রামিঙের একটি ক্র্যাশকোর্স। আমরা অনেক নুতন প্রজেক্ট করা শিখলাম। আমি নিজেও খুশী কারণ আমি নতুন বন্ধু বানালাম এবং এই সময়ে টাকাও ভাল কামালাম
নতুন বস আর কাজের জন্য আমি অনেক উত্তেজনা নিয়ে অপেক্ষা করি
তবে, অন্যদের মত আমি ওরাকল নিয়ে কোন রিসার্স করি নাই। আমাকে কী কাজ করতে দেওয়া হবে এই নিয়েও আমার বিন্দুমাত্র ধারণা ছিল না। আমার কেবল মনে আছে ক্যাম্পাসে কেও একজন আমার একটা ইন্টারভিউ নিয়েছে এবং তারা আমার ট্রান্সক্রিপ্ট দেখে খুবই প্লীজড হয়েছে। ওরা আসলে ছাড়া আমার সম্পর্কে আর কিছুই জানে না এবং আমিও তাদের সম্পর্কে তেমন কিছু জানি না। আমি খালি জানিসফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারহিসাবে চাকরি করার জন্য ওরা আমাকে ৪০ হাজার করে টাকা দেবে!
ওরাকলে আমার প্রথম কাজের দিনে আমাকে আমার ডেস্ক দেখিয়ে দেওয়া হল। আর আমার কাজ হল – “টেকনিক্যাল কোয়ালিটি এসুরেন্স এন্ড রিগ্রেশন টেস্ট এটা কী সে সম্পর্কে আমার কোন আইডিয়া নেই এবং আমি মোটই তাতে চিন্তিত নই। কারণ আমি তো টাকা পাচ্ছি! আর সপ্তাহখানেকের মধ্যে আমি বুঝে ফেল্লাম এটা খুবই সহজ টাকা!
আমার কাজ হলো দিনে কয়েকটা অটোমেটেড টেস্ট চালানো। টেস্ট রেডি করার জন্য - মিনিট সময় লাগতো। তারপর টেস্টটা চালায় দিলে এটি প্রায় ঘন্টা তিনেক চলতো। এই সময় আমার কাজ ছিল কম্পিউটারের সামনে বসে থাকা অথবা এদিক সেদিক ঘুরে বেড়ানো। তারপর সেটা শেষ হলে আর একটা টেস্টের জন্য কাজ শুরু করা। আমি লক্ষ করলাম আমি কখন আসি, কখন যাই এই নিয়ে কারো কোন মাধাব্যাথা নাই, কেও এমনকি আমাকে নজরদাড়িতে রেখেছে বলেও আমার মনে হয় না। আমার ধারণা আমি যে নতুন জয়েন করেছি এটাও কেও খেয়াল করে নাই!
প্রথম মাস এবং তারপরের দিনগুলোতে আমি নিজেকে খুবই সৌভাগ্যবান ভাবলাম। কারণ আমি প্রায় বিনা কষ্টে ব্যাপক টাকা কামাতে শুরু করেছি। আমি আর সঞ্জয় মিলে কাছেই একটা এপার্টমেন্ট ভাড়া করলাম যেখানে হেঁটে যেতে আমাদের মাত্র মিনিট সময় লাগে
সপ্তাহখানেকের মধ্যে আমি আমার দিনের  রুটিনটা বানিয়ে ফেললাম
১০.০০          :         ডেস্কের সামনে নিজেকে হাজির  রাখা
১০.০৫          :         একটা টেস্ট শুরু করা
১০.১০         :         -মেইল চেক করা। আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধবের -মেইলের জবাব দেওয়া
১১.৩০        :         মধ্যাহ্ন ভোজের জন্য বাসায় যাওয়া
১২.৩০          :         ভাতঘুম !
.৪৫            :         আবার অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা
.০০            :         আর একটা টেস্ট শুরু করা
.০৫            :         -মেইল চেক করা। আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধবের -মেইলের জবাব দেওয়া
.০০            :         বাসার দিকে রওনা দেওয়া

আমার জন্য যতোটা সহজ এই ব্যাপারটা সঞ্জয়ের জন্য কিন্তু ততোটা সহজ ছিল না। কারণ ওর ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা ৭টা বাজতো। তার কাজটা কেমন একটা জানতে চাইলেই সে সব সময় বলে- ঠিক আছে। তোমন একটা এক্সসাইটিং না
আমি তাকে বললাম আমার কাজটাও নেহায়েত ছাপোষা। কোন উত্তেজনা নাই। বোরিং। কাজে আমি তাকে বললামচলো একটা কিছু করি যাতে বোরিংনেজটা কাটানো যায়। আমরা রাতে বা সপ্তাহান্তে কাজ করতে পারবো
এর মধ্যে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের ব্যাপারটা জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে। সঞ্জয়ের গ্রাফিকসের হাত খুব ভাল। কাজে আমরা চাইলে অন্যদের জন্য এয়েবসাইট বানাতে পারি
নিজেদের একটা সাইড বিজনেজের ব্যাপারটা একটা মজা হিসাবেই গন্য করলাম। আমাদের কোম্পানির নাম দিলাম ইন্টারনেট মার্কেটিং সলিউশন অথবা সংক্ষেপে আইএমএস। আমরা আমাদের নিজেদের ওয়েবসাইট তৈরি করলাম, কাস্টোমাইজ নেম কার্ড প্রিন্ট করলাম এবং এপার্টমেন্টে নতুন একটা টেলিফোন লাইন নিলাম
আর এভাবে আমরা তৈরি হলাম আমাদের নতুন মজার জন্য!


পর্ব-১৪ : ইয়্যু উইন সাম, ইয়্যু লস সাম-নিজের কোম্পানি


আমাদের ওয়েবসাইট কোম্পানির কয়েকজন গ্রাহক দরকার। আমাদের নিজেদের একটা বুদ্ধি ছিল কীভাবে আমরা আমাদের গ্রাহক যোগাড় করবো্। প্ল্যানটা হল প্রথমে আমরা স্থানীয় চেম্বার অব কমার্সকে তাদের ওয়েবসাইট বানিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেব, নিখরচায়। তারপর চেম্বারের ব্যবসায়ীদের বলবোদেখো তোমাদের চেম্বারই তাদের ওয়েবসাইট আমাদেরকে দিয়ে বানিয়েছে। তোমারা চাইলে তোমাদেরটা আমরা বানিয়ে দেওয়ার কথা ভাবতে পারি। (চামে আমরা চেম্বারের টাকা না দেওয়ার বিষয়টা চেপে যাবো) ব্যস, আমরা অনেক গ্রাহক (এবং টাকা, মানে ডলার) কামানো শুরু করবো!
কাজে প্রথম কাজ প্রথমে। চেম্বারের সঙ্গে এপয়ন্টমেন্ট। এই কলের জন্য যদিও কোন টাকা লাগে না, কিন্তু এটাই আমার প্রথম সেলস কল। একটু নার্ভাসতো হয়েছি। যাই হোক, ফোন করে দুপুর সাড়ে বারোটায় একটা ক্ষণ ঠিক করলাম। এটা আমার দৈনিক রুটিনের সঙ্গে খুবই মানানসই। দুপুর বেলায় এমনিতে আমারলম্বা সময় হাতে থাকে
নির্ধারিত দিনে আমি যথার্থই নার্ভাস বোধ করেছি। আমি আগে কখনো কোন সফল সেলস মিটিং করি নাই! আমি বিশ্বাস করতামপ্রথমে দর্শনধারি, পরে গুন বিচারি। কাজে ঐদিন ১১.৩০ মিনিটে আমি প্রথমে আমার এপার্টমেন্টে ফিরলাম। তারপর সমাবর্তন উপলক্ষে বানানো স্যুট-টাইতে নিজেকে সাজালাম। প্রচুর বিজনেজ কার্ড নিলাম সঙ্গে। কয়েকদিন আগে সঞ্জয় আমাদের কোম্পানির কিছু ব্রশিউর বানিয়েছে। সেগুলোও কিছু নিলাম
নিজেকে বোঝালাম আমার কাজ হবে দুইটা
  • চেম্বারকে বোঝাতে হবে ওদের একটা ওয়েবসাইট দরকার ওয়েবসাইট ছাড়া দুনিয়াটা অন্ধকার
  • আর আমাদেরকে দিয়েই ওদের ওয়েবসাইট বানাতে হবে, কারণ আমরাই সেরা!
কাজটা কঠিন হলেও আমি সফল হলাম। চেম্বারের লোকেরা খুবই রিসেপটিভ ছিল কারণ আমরা সবকিছু একেবারেই ফ্রিতে করে দিচ্ছি
এর পরের একমাস আমার লাঞ্চটাইম দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হল। আমি প্রায় প্রতিদিনই চেম্বারে যেতাম। কারণ, আমাদের পরিকল্পনা ছিল চেম্বারের মন পাওয়া। কোন ভুল আমরা করতে চাই না। সঞ্জয়ের রাতের ঘুমও হারাম হচ্ছে কারণ সাইট বানানোর কাজটা তার। মানে আমি হচ্ছি সেলস আর কাস্টোমার সাপোর্ট আর সঞ্জয় হল প্রোডাক্ট আর ডিজাইন গাই। একটা চমৎকার টিম!
মাসখানেকের মধ্যে আমরা চেম্বারের ওয়েবসাইট ডেলিভারি করে ফেললাম, ওদের মনোরঞ্জনসহ। এখন আমাদের টাকাওয়ালা গ্রাক দরকার। আমাদের প্রথম টার্গেট হল হিলসাইড মল। মল বেছে নেওয়ার কারণটা সোজা। যদি আমরা এই সুপারস্টোরকে সাইন করাতে পারি তাহলে এর ভেতরের সব সাপ্লায়ারকে গিয়ে বলতে পারবোদেখো, সুপার মার্কেটের ওয়েবসাইটটা আমরা বানাবো। তোমাদেরটাও আমরা বানাই দিতে পারি
কাজে পরের কিছুদিন আমি ওরাকলে আরো কম সময় দিলাম (আমার কাজের কিন্তু কোন হেরফের হলো না) কারণ আমি চারদিকে ব্যবসা খুঁজতে শুরু করলাম
কয়েকমাসের মধ্যে আমরা হিলসাইড মলকে রাজী করাতে পারলাম
ওয়েবসাইটের ডিজাইন, ম্যানেজ আর হোস্টিং-এর জন্য তারা আমাদের  দুই হাজার টাকা দিতে সম্মত হল!!!


ওয়াও! আমাদের প্রথম টাকার কাস্টোমার আমরা পেয়ে গেলাম
কাজে এখন আর আমাদের ওরাকলের বোরিং কাজ করতে হবে না
আমরা আমাদের চাকরি ছেড়ে দিতে পারি। আমরা আর চাকরি করবো না!!!
ভাবছি। যদি এমন কাউকে পাওয়া যেত যে আমার রেকর্ড করা কথা শুনে কম্পোজ করে দেবে তাহলে হয়তো আর একটু দ্রুত আগানো যেত। দেখি কাউকে পাওয়া য়া কী না।]

ডেলিভারিং হ্যাপিনেজ- পর্ব-১৫ : চাকরিটা আমি ছেড়ে দিচ্ছি, বেলা শুনছো?

সেদিন সকালবেলা থেকে আমি খুব নার্ভাস। আজকেই আমার ওরাকলে চাকরি ছাড়ার দিন। বসকে বলবো, “চাকরিটা আমি ছেড়ে দিচ্ছি
অপিসে এসে নিজেকে প্রস্তুত করতে শুরু করলাম। আধা ঘণ্টা ধরে হাঁটাহাঁটি করলাম, চেষ্টা করলাম, নিজেকে তৈরি করলাম এবং তারপর শেষ পর্যন্ত সাহস সঞ্চয় করে তার অফিসের দিকে রওনা দিলাম। বসের অফিসটা হলের একেবারে শেষ মাথায়। আর আমার কিউবিকল অন্য মাথায়। আমি তাকে কথাটা বলতে চাই
হাটতে হাটতে তার অফিসের সামনে গেলাম একটা জানালা মত আছে। জানালা দিয়ে সে আমাকে দেখতে পাচ্ছে। মনে হল আমার দিকে তাকালো,আমাদের চোখাচোখি হল। আমি স্পষ্টতই টের পাচ্ছি যে আমার হার্টবিট ক্রমাগত বাড়ছে এবং সেটি দ্রুতলয়ে হয়ে যাচ্ছে। একটু পরই উনি অন্যদিকে তাকালেন। আমি সাহস করে আর একটু এগোলাম এবং দেখলাম উনি আসলে আরেকজন এর সঙ্গে সেখানে মিটিং করছেন। উনি একা নন। কাজেই এই মুহূর্তে তাকে বলাটা ঠিক হবে না
আমি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। কথাটা বলতে হবে না। হাঁটতে হাঁটতে তার অফিস ছাড়িয়ে গেলাম। ভাবটা এমন যে, আমি আসলে তাঁর অফিস ছাড়িয়ে যে টয়লেট সেখানে যাচ্ছি! টয়লেটে গিয়ে কিছুক্ষণ বসে থাকলাম। তারপর হাত ধুয়ে নিজের কিউবিকলে ফিরে আসলাম। টের পেলাম আমি প্রায় ঘেমে উঠেছি। কথাটা বলতে না হওয়ায় আমার হার্টবিট আবার স্বাভাবিক হল
এবার নিজের কাজে লেগে গেলাম। পরবর্তী আধা ঘণ্টা ধরে  বন্ধুদেরকে -মেইল করলাম। ৩০ মিনিটের বেশি হয়ে যাওয়ার পরে আমি উপলব্দি করলামনা, আমাকে বলতেই হবে
কাজটা আবার করা যেতে পারে। বসের মিটিং কি শেষ? আরও ১৫ মিনিট বসে থাকলাম এবং তারপর আবার বসের অফিসের দিকে হাঁটা শুরু করলাম
আরে। এবার দেখি আমি আরো বেশি নার্ভাস। কেন যে এমন হচ্ছে এটা বুঝতেই পারছি না। ঠিক করলাম, যদি উনি তখনো মিটিং থাকে তাহলে আমি আবার টয়লেটে চলে যাবো। তাতে অবশ্য বসের ধারণা হতে পারে আমার পেট খারাপ। আবার হয়তো সে একটু অবাক হবে কারণ আমার নিজের ডেস্কের পাশেই কিন্তু একটা টয়লেট আছেএসব নিয়ে অনেক চিন্তা করে কোন লাভ নাই। আমি নিজেকে সাহস দিলাম এবং এবং অফিসের সামনে হাজির হলাম। তার দরজাটা খোলা এবং আমি তার দরজার সামনে গিয়ে ভেতরে তাকালাম। সম্ভবত ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিনতম পদত্যাগ। আমি ঈশ্বরকে বললাম সে যেন ভেতরে না থাকে!
ঠিক তাই। ভেতরে তাকিয়ে দেখলাম কেও নাই। যাক আবার আমি বেঁচে গেলাম
যাক। পরে বলা যাবে। আগে লাঞ্চ। আমি লাঞ্চের পরে এসে রেজিগনেশন লেটার দিবো এবং তখন তৃতীয়বার চেষ্টা করবো। আমি দরজার সামনে থেকে আমার ডেস্কের দিকে যাওয়ার জন্য ঘুরে দাঁড়ালাম। ঘুরে দাঁড়াতেই আবিস্কার করলাম আমার বস আমার পিছনে দাঁড়ানো!!!
-টনি, তুমি কি আমাকে খুঁজছ?
-আমি মোটেই এরকম কোন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিলাম না, আমি চিন্তা করছিলাম লাঞ্চে গিয়ে কি খাব। তখন আমি খুবই হতাশ হলাম, সারপ্রাইজড হইলাম এবং তাড়াতাড়ি তাকে বললাম- না না, আপনাকে খুঁজছি না। দুঃখিত! এবং আমি তার সামনে থেকে যত দ্রুত সম্ভব চলে আসলাম। তারপর আমি লাঞ্চ করার জন্য চলে গেলাম পাশের দোকানে এবং সেখানে দুইটা ডাবলডেকার ভ্যালুমিলের অর্ডার দিলাম। অবাক। সব আমি খেয়ে ফেললাম!
উদরপূর্তির পর আমি বেশ শান্ত হলাম এবং বুঝলাম এইবার আমি বলতে পারবো। আমি অফিসে ফিরে আসলাম অপরাহ্ণে এবং তখন খুব মোটামুটি একটা ভালো অবস্থায় আছি যে আমি এখন রিজাইন করতে পারবো
আমি আমার কিউবিকলের কাছে যে বাথরুম আছে সেখানে একবার গেলাম। আমার এলিবাইটা ঠিক রাখা দরকার। ঈশ্বর আমার পক্ষে। দেখলাম ক্লিন করার জন্য সেটি বন্ধ
এবার সরাসরি তার রুমে চলে গেলাম। এবার আমি শান্ত। উত্তেজনা নেই বললেই চলে। আমার কথা যেন কেও শুনতে না পায় সেজন্য দরজাটা ভিজিয়ে দিলাম। এবং বুঝলাম আমি পয়েন্ট অব নো রিটার্নে চলে এসেছি
আমি পদত্যাগ করবো ঠিক করেছিআমি খুব নার্ভাসভাবে বললাম
আমি মাত্র পাঁচমাস ধরে ওরাকলে চাকরি করি। আসলে আমি তেমন কিছু করি নাই এখানে এবং আমি ঠিক জানিও না আমার বস এটা কিভাবে নিবে। আমার মনে হল উনি খুব ক্ষেপে যেতে পারে, আপসেট হতে পারে। উনি ওরাকল অনেকদিন ধরে আছেন। আর আমি মাত্র কয়েকদিন এর মধ্যে ভাগছি!
সেকেন্ডের মত ওনার লাগলো আমার দিকে উনি তাকিয়ে থাকলেন। এবং তারপরেই উনি বললেন- ‘ওয়াও! তুমি নিশ্চয়ই কোন স্টার্টআপ জয়েন করতে যাচ্ছ। What an exciting opportunity’
উনি খুব সোৎসাহে এবং আনন্দের সঙ্গে আমার পদত্যাগ গ্রহণ করলেন। (এমনটা জানলে সকালটা এত বাজে হতো না) ওনার ধারণা হল আমি একটা নতুন কোম্পানিতে যাচ্ছি এবং কিছু দিনের মধ্যে মিলিয়ন ডলার কামিয়ে ফেলবো
আমি ঠিক জানি না আমার হৃদয় আমাকে সেসময় কী বলছিল কিন্তু আমি এটা জানি যে আমি ওরাকল বোরড হয়ে গেছি এবং আমি আমার নিজের বিজনেস নিজে করতে চাই। এটা আসলে টাকার ব্যাপার না, এটা হল নিজে যাতে বোর না হই সেজন্য
কাজেই আমি এবং সঞ্জয় আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করলাম এবং আমরা নতুন এডভেঞ্চার এর জন্য রেডি হলাম

[জাপ্পোসের সিইও টনি সেই-এর বিখ্যাত বই দর্শ ষুখ বিতরণের কিছু অংশ আমি অনুবাদ করছি আমার মত করে, আমাদের উদ্যোক্তাদের জন্য। এটি আক্ষরিক অনুবাদ নয়]

ডেলিভারিং হ্যাপিনেজ (পর্ব ৭ - ১২ )


Post & Photo Credit: Munirhasan.com

No comments:

Post a Comment

Disclaimer

Disclaimer: All the information on this website is published in good faith and for general information purpose only. Some content i...