ডেলিভারিং হ্যাপিনেজ – অবতরণিকা
পুরা রুমভর্তি লোক। কোথাও কোন ফাঁকা নেই। আমি স্টেজে এই মবকে কিছু বলার জন্য হাজির হয়েছি। আমার সামনে জাপ্পোসের ৭০০ কর্মী। এদের কারো কারো চোখ দিয়ে অশ্রুও পড়ছে।সবার চোখে মুখে সুখ সুখ!
৪৮ ঘন্টা আগেই সবাই সুখবরটা শুনেছে। আমাজান আমাদের অধিগ্রহণ করছে। বাী বিশ্বের কাছে এটি একটা টাকার গল্প। এক বিলিয়ন ডলারে জাপ্পসোকে কিনলো আমাজন। এই ছিল বেশিরভাগ পত্রিকার শিরোনাম। কোথাও ছিল “আমাজনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অধিগ্রহন”।
১৯৯৮ সালের সভেম্বর মাসে মাইক্রোসফট লিঙ্কএক্সচেঞ্জ নামের একটি কোম্পানিকে কিনে ননেয় মাত্র ২৬৫ মিলিয়ন ডলারে। আমি সেই কোম্পানির একজন সহ-প্রতিষ্ঠাতা। আর এখন এই ২০০৯ সালের জুলাই মাসে জাপ্পোসের প্রধান নির্বাহী হিসাবে আমি আমাজনের আমাদের অধিগ্রহণের কথা ঘোষণা করেছি। এটি আমাদের দশম বর্ষপূর্তির কয়েকদিন পরের ঘটনা। দু’টো ঘটনার একটাই মিল। আমাদের দুই কোম্পানিই বছরে ১০০ মিলিয়ন ডলার করে কোম্পানিতে অগ্রগতি করেছে।
রুমে আমরা যারা ছিলাম তাদের সবার কাছে কেবল টাকাটাই মুখ্য ছিল না। কারণ আমরা সবাই মিলে এমন একটি ব্যবসা দাড় করিয়েছি যা মুনাফা, ভালবাসা এবং জীবন যাপনের উদ্দেশ্য সৃষ্টি করতে পেরেছে। এবং এটাও ঠিক যে এটি কেবল একটি কোম্পানিকে দাঁড় করানো নয়। বরং এই একটি জীবনধারাকে গড়ে তোলা যা কি না সুখ বিতরণ করে, আমরাসহ সবার জন্য।”
আসলেই কী সুখ বিতরণ করা যায়? সত্যিই কি এমন ব্যবসা সম্ভব? টাকার পেছনে দোড়াবো নাকি নিজের ইচ্ছে, ভালবাসা আর স্বপ্নের পেছনে?
জাপ্পোসের প্রধান নির্বাহী টনি সেই তার সুখ বিতরণের গল্প লিখেছেন “ডেলিভারিং হ্যাপিনেস” নামের একটি বইতে। আমার ঠিক মনে নাই এরকম গ্রোগ্রাসে আমি কোন বিজনেস বই পড়েছি কি না। ছোট বই। আমি তিন পর্বের প্রথম পর্ব পড়ে ফেলেছি। হটাৎ মনে হল আরে আমার পাঠকদের সঙ্গে তো শেযার করা হচ্ছে না। যদিও একটা অংশ কদিন আগে একবার ব্লগে দিয়েছি।
তাই ভাবছি জাপ্পোসের গপ্পটা লিখবো নাকি?
জাপ্পোসের প্রধান নির্বাহী টনি সেই তার সুখ বিতরণের গল্প লিখেছেন “ডেলিভারিং হ্যাপিনেস” নামের একটি বইতে। আমার ঠিক মনে নাই এরকম গ্রোগ্রাসে আমি কোন বিজনেস বই পড়েছি কি না। ছোট বই। আমি তিন পর্বের প্রথম পর্ব পড়ে ফেলেছি। হটাৎ মনে হল আরে আমার পাঠকদের সঙ্গে তো শেযার করা হচ্ছে না। যদিও একটা অংশ কদিন আগে একবার ব্লগে দিয়েছি।
তাই ভাবছি জাপ্পোসের গপ্পটা লিখবো নাকি?
আর লিখলে সেটা কি উত্তম পুরুষে ভাবান্তর হবে নাকি তৃতীয় পুরুষে আমি বলব? আমি এখনো ব্যাপারটা ঠিক করি নাই। দেখি আমার পাঠকরা কোন ফর্ম পছন্দ করে। না হয় সেই ফর্মেই লেখা যাবে।
ডেলিভারিং হ্যাপিনেজ – মুনাফার সন্ধানে-১: কেঁচোর খামার
তারপর তারা হাসবে,
এরপর তারা তোমার বিরুদ্ধে লড়বে,
শেষমেষ তুমি জিতবে।
– গান্ধী
আমি নিশ্চিত যে আমার যখন নয় বছর বয়স তখন আমার সম্পর্কে গান্ধীর কোন ধারণাই ছিল না। এবং আমিও আসলে জানতাম না গান্ধী কে! কিন্তু গান্ধী যদি জানতেন যে, কেঁচো বিক্রি করে আমি কোটিপতি হওয়ার চিন্তা করেছি তাহলে তিনি আমাকে অনুপ্রাণিত করার জন্য ওপরের উক্তিটাই করতেন।
দুর্ভাগ্যবশত গান্ধী আমাদের বাড়িতে কখনো পা রাখেননি।আমার সবম জন্মদিনে আমি আমার বাবা-মা’র কাছে একটা অদ্ভুত আবদার করেছি। আমাদের বাসা থেকে উত্তরে ঘন্টাখানেকে দূরত্বে, সনোমাতে একটি কেঁচোর খামারে আমাকে নিতে হবে। তারা সেখান থেকে ৩৩.৪৫ লারে আমাকে এক বাক্স কাঁদা কিনে দিলেন। খামারীরা নিশ্চয়তা দিল যে ওখানে কমপক্ষে ১০০টা কেঁচো আছে।
আমি বই এ পড়েছি যদি একটা কেঁচোকে কেটে দুই টুকরা করা যায় তাহল সেটি না মরে দুইটা কেঁচোতে পরিণত হয়। এভাবে আমার কেঁচোর সংখ্যা কয়েকগুন বাড়ানোর কথা আমি ভেবেছি। তবে, কেঁচো কাটাকাটি যথেষ্ট সময় ও শ্রমসাধ্য। তাই আমি একটা বুদ্ধি করলাম। আমি আমাদের বাড়ির পেছনে একটা কেঁচোর বাক্স বানালাম যার নিচি দিলাম চিকন তার। তারপর বাক্সটাকে কাদা দিয়ে ভর্তি করে সেখানে ১০০ কেঁচোকে ছেড়ে দিলাম। একন যতবারই কেঁচোগুলো নিচে চিকন তারকে অতিক্রম করতে যাবে এমনিতেই টুকরা হয়ে যাবে। কাজে অচিরেই আমার খামারে অনেক কেঁচো পাওয়া যাবে। প্রতিদিন আমি একটা ডিমের কুসুম নিয়ে বাক্সের কাঁদার মধ্যে ছেড়ে দিতাম। কারণ আমি দেখেছি যারা এতলেট তারা কাঁচা ডিমের কুসুম খায় শক্তির জন্য। কাজে আমি ভেবেছি আমার কেঁচোগুলোও ডিম খেয়ে স্বাস্থ্যবান হবে।এ নিয়ে আমার বাবা-মা আসলে মোটেই চিন্তিত হতেন না। কারণ হল মা ভাবতেন এর ফলে আমি আর আমার ভাই ডিমের শাদা অংশটা খাচ্ছি আর তাতে আমাদের কোলেস্টেরলটা বাড়বে না।
এভাবে মাসখানেক যাবার পর আমি ভাবলাম আমার খামারের কী অবস্থা যাচাই করা যাক। আমি খুব সন্তর্পনে বাক্সের কাঁদা সরাতে শুরু করলাম যাতে ছোট ছোট কেঁচোগুলো ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
এ কি! কিছুক্ষণের মধ্যে আমি টের পেলাম ওখানে কোন বাচ্চা কেঁচো নাই। এমনকী বড় যে ১০০টা ছেড়েছিলাম সেগুলোরও কোন অস্তিত্ব নাই!!!
হয় সেগুলো বাক্স ছেড়ে চলে গেছে না হলে ডিমের কুসুমের লোভে আসা কোন পাখির পেটে গেছে।
হয় সেগুলো বাক্স ছেড়ে চলে গেছে না হলে ডিমের কুসুমের লোভে আসা কোন পাখির পেটে গেছে।
কেঁচোর সাম্রাজ্য গড়ে তোলার ব্যাপারটা এভাবেই শেষ হল। আমি বাবা-মাকে বললাম কেঁচোর খামারের কাজটা খুবই বোরিং। আমি আর ওতে নাই। আসলে আমি আমার ব্যর্থতার কথা আসলে বলতে চাইনি। আমার খুব খারাপ লেগেছে।
যদি টমাস আলভা এডিসন যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে হয়তো তিনি আমাদের বাসায় এসে বলতেন – আমি সাফল্যের পথে ব্যর্থ হয়েছি।
যদি টমাস আলভা এডিসন যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে হয়তো তিনি আমাদের বাসায় এসে বলতেন – আমি সাফল্যের পথে ব্যর্থ হয়েছি।
উনি মনে হয় অন্য কোন বিষয় নিয়ে ব্যস্ত। কারণ গান্ধীর মত উনিও কোনদিন আমাদের বাসায় আসেননি! মনে হয় তারা দুজনই ব্যস্থ আছেন নিজেদের নিয়ে!!!
[জাপ্পোসের প্রধান নির্বাহী টনি সেই-এর বিখ্যাত বই ডেলিভারিং হ্যাপিনেজ পড়ছি। সঙ্গে তাঁর অংশবিশেষ সবাইকে জানাচ্ছি। কতদূর যেতে পারবো আল্লাহ মালুম। এই পর্বটি ছোটই!]
ডেলিভারিং হ্যাপিনেজ – মুনাফার সন্ধানে-২: বেড়ে ওঠা
তাইওয়ান থেকে পড়ালেখা করার জন্য আমার বাবা আর মা ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন আলাদাভাবে্। সেখানেই তাদের সাক্ষাৎ এবং বিবাহ। যদিও আমার জন্ম ইলিনয়ে কিন্ত লাফানোর বোর্ডে লাফালাফি করা আর মশা মারার স্মৃতি ছাড়া আর সেখানকার কোন স্মৃতি আমার নাই। আমার যখন পাঁচ বছর বয়স তখন বাবা ক্যালিফোর্নিয়াতে চাকরি পান। আমরা চলে আসি সানফ্রান্সিসকোর মেরিন কাউন্টিতে। এটি গোল্ডেন গেট ব্রিজের কাছে। আমাদের নতুন বাসস্থান হল স্কাই ওয়াকার রেঞ্চ থেকে ২০মিনিটের গাড়ি দূরত্বে, লুকাস উপত্যকায়। স্কাই ওয়াকার রেঞ্ঝে থাকন স্টার ওয়ার্সের জর্জ লুকাস!
এশিয়ান বাবা-মার মতই আমার বাবা মা। বাবা কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আর মা সমাজকর্মী। আমাদের তিনভাই-এর কাছে তাদের একাডেমিক প্রত্যাশা ছিল আকাশ চৃম্বী। আমার ছোটটা আমার থেকে দুই বছরের ছোট আর ক্যালিফোর্নিয়ায় আসার ৪ বছর পরে সবচেয়ে ছোটটার জন্ম।
মেরিন কাউন্টিতে বেশি এশিয়ান ছিল না। কিন্তু বাবা-মা কেমনে জানি ১০টার সবকটাকে যোগাড় করতে পেরেছে। ফলে, রেগুলার এই ১০ পরিবারের আড্ডা বেড়ানো হত। আড্ডার একটা বড় দিক ছিল সন্তানের সাফল্য নিয়ে বড়াই করা! এই সময় অবশ্য আমরা টিভি দেখতে পারতাম।
মেরিন কাউন্টিতে বেশি এশিয়ান ছিল না। কিন্তু বাবা-মা কেমনে জানি ১০টার সবকটাকে যোগাড় করতে পেরেছে। ফলে, রেগুলার এই ১০ পরিবারের আড্ডা বেড়ানো হত। আড্ডার একটা বড় দিক ছিল সন্তানের সাফল্য নিয়ে বড়াই করা! এই সময় অবশ্য আমরা টিভি দেখতে পারতাম।
এশিয়ান বাবা-মা’র কাছে তিন ক্যাটাগরির সাফল্য ছিল প্রধান। প্রথমত ভাল গ্রেড, যে কোন ধরণের পুরস্কার কিংবা কাউন্টি ম্যাথ টিমে চান্স পাওয়া। তবে, সবচেয়ে বেশি ছিল বাচ্চারা কোন স্কুলে ভর্তি হচ্ছে সেটা। হার্বার্ড ছিল একেবারে ১ নম্বরে!
২ নং ক্যাটাগরি হচ্ছে ক্যারিয়ার। মেডিকেল ডাক্তার বা পিএইচডি হচ্ছে এই লাইনের সর্বোচ্চ। কারণ তাহলে “মি. সেই” এর জায়গায় আমি হয়ে যাব “ড. সেই”।
২ নং ক্যাটাগরি হচ্ছে ক্যারিয়ার। মেডিকেল ডাক্তার বা পিএইচডি হচ্ছে এই লাইনের সর্বোচ্চ। কারণ তাহলে “মি. সেই” এর জায়গায় আমি হয়ে যাব “ড. সেই”।
আর তিন নম্বর হল যন্ত্রসংগীত। সব এশিয়ান শিশুকে হয় পিয়ানো না হয় বেহালা কিংবা দুটোই শেখার জন্য বাধ্য করা হত। রাতের খাবারের শেষ শিশুদের তাদের পারফরম্যান্স করতে হত। যদিও এটি পিতামাতাকে আনন্দ দেওয়ার জন্য, আসলে কিন্তু এর মাধ্যমে হত তুলনা!
আমার বাবা-মাও আমাদের বড় করা ক্ষেত্রে খুবই সতর্ক ছিলেন। আমি সপ্তাহে মাত্র এক ঘন্টা টিভি দেখার সুযোগ পেতাম। স্কুলের সব বিষয়ে এ গ্রেড ছিল প্রতইাশিত। আরি মিডল আর হাই স্কুলের পুরোটা জুড়ে ছিল এসএটির প্রস্তুতি।সাধারণ সবাই হাই স্কুলের শেষে স্যাটের প্রস্তুতি শুরু করে। কিন্তু আমার বেলায় এটি ছিল গ্রেড সিক্স!
মিডল স্কুলে থাকতেই আমি চার চারটি বাদ্যযন্ত্র বাজাতে শিখি। পিয়ানো, বেহালা, ট্রাম্পপেট আর ফ্রেঞ্চ হর্ন। স্কুলের দিনগুলোতে প্রতিদিন প্রতি বাদ্য আধাঘন্টা করে বাজাতে হত, শনি-রবি এক ঘন্টা করে। সামার ভ্যাকেশনেও একঘন্টা প্রতিদিন প্রতি বাদ্যে! অথচ আমার ইচ্ছে ছিল সামার ভ্যাকেশনের ভ্যাকেশন পার্টটার খোঁজ নেওয়া!
কাজে আমার ভ্যাকেশনকে আনন্দময় করার একটা রাস্তা আমি নিজেই খুঁজে বের করলাম। প্রতিদিন ভোর ৬টার সময়, যখন আব্বা-আম্মা ঘুমায় থাকতো তখন আমি নিচতলায় গিয়ে পিয়ানো বাজাতাম। আসলে বাজানোর বদলে আমি চালিয়ে দিতাম টেপ রেকর্ডার যেখানে আমি আমার একটা এক ঘন্টার সেশন আগেই রেকর্ড করে রেখেছি। ৭ টার সময় রুমে ফিরে চালিয়ে দিতাম আমার বেহালার রেকর্ড, দরজা বন্ধ করে দিয়ে! টেপ চলার সময় আমি কোন বই বা বয়েজ লাইফ ম্যাগাজিন পড়তাম। পিয়ানো আর বেহালার শিক্ষকরা আমার অগ্রগতিতে খুবই অবাক হতেন। শেষে তারা ধরে নেন যে আমি একজন খুবই “স্লো লার্নার”।
(মা যখন এই লেখাটা পড়বেন তখন নিশ্চয়ই খুবই রেগে যাবেন। আমি বরং মাকে এই খাতে খরচ হওয়াটা টাকাটা সুদে আসলে ফেরৎ দিয়ে দেব)
(মা যখন এই লেখাটা পড়বেন তখন নিশ্চয়ই খুবই রেগে যাবেন। আমি বরং মাকে এই খাতে খরচ হওয়াটা টাকাটা সুদে আসলে ফেরৎ দিয়ে দেব)
আমার বাবা-মা, বিশেষ করে আমার মা’র উচ্চঅমঅ ছিল হয় আমি ডাক্তার অথবা ডক্টর হব! কিন্তু আমি দেখছিলাম ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত আমার বন্দী জীবন!
আমার কিন্তু বেশি ইচ্ছে ছিল টাকা কামানোর জন্য নিজের কোন ব্যবসা করা। এটা নিয়েই আমার সারাক্ষণের চিন্তা ভাবনা। অথচ বাবা মা কিন্তু আমাকে টাকা পয়সা নিয়ে চিন্তা করতে না করে দিয়েছে। কারণ আমার পড়ালেখার টাকা তারা যোগাড় করেছে। এমডি বা পিএইচডি পর্যন্ত পুরো টাকাই ওনারা দেবেন বলে আমাকে আশ্বত্ব করেন। তারা আমাকে সুন্দর সুন্দর, আমার ইচ্ছে মত জামা কাপড় কিনে দিতেও রাজী ছিলেন। যদিও আমি মোটেই ফ্যাশন সচেতন ছিলাম না।
টাকা কামানোর চিন্তার পেছনে আমার দুইটি উদ্দেশ্য ছিল। একটা হল টাকা হলে আমি আমার ইচ্ছেমত খরচ করতে পারবো। তবে, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল এর জন্য আমাকে সৃজনশীল ও উদ্ভাবক হতে হবে যা কিনা আমাকে আমার বস হতে সাহায্য করবে।
আর্লি স্কুলে থাকতে আমি অনেক গ্যারাজ সেল করেছি। যখন আমাদের গ্যারাজের জিনিষ শেষ হয়ে যায তখন আমি আমার এক বন্ধুকে তাদের গ্যারাজের জিনিষ বেচতে রাজি করায়। আমার বন্ধুটিকে এমনভাবে কাপড় পড়ানো হয় তাতে তাকে ৫ বছরের ছোট দেখায়। সেলের সঙ্গে আমরা লেমোনেড বিক্রিরও একটা ব্যবস্থা রেখেছি। দিন শেষে দেখা গল আমাদের লেমোনেড বিক্রির টাকায় বেশি!
মিডল স্কুলে আমি পেপার বিক্রি শুরু করলাম। কিন্তু অঙ্ক করে দেখলাম এতে আমার ঘন্টার উপার্জন হয় মাত্র দুই ডলার। আমি ঠিক করলাম আমি পেপার বিক্রি করবো না, বরং নিজেই একটা নিউজ লেটার বের করব!
ডেলিভারিং হ্যাপিনেজ – মুনাফার সন্ধানে-৩: ব্যবসার শুরু!
আমি আমার নিজের নিউজলেটারের পরিকল্পনা করলাম। প্রায় ২০ পৃষ্ঠাজুড়ে থাকবে আমার লেখা গল্প, ধাঁধা আর কৌতুক।উজ্জ্বল কমলা রঙ্গের কাজগে আমি আমার নিউজলেটার প্রিন্ট করলাম আর নাম দিলাম দ্যা গবলার। দাম রাখলাম ৫ টাকা (ডলার)।আমি স্কুলে চার বন্ধুর কাছে পত্রিকা বিক্রি করতে পারলাম।
এতে অবশ্য আমার হবে না। আমার টাকা কামাই-এর সোর্স বাড়াতে হবে। হয় বেশি বন্ধুর কাছে পত্রিকা বেঁচতে হবে নতুবা নতুন কিছু করতে হবে। এর পর যেদিন আমি সেলুনে চুল কাটাকইতে গেলাম তখন নামিতকে রাজী করানোর চেস্টা করলাম যেন আমার পত্রিকয় সে একটা পূর্ণ পৃষ্ঠার বিজ্ঞাপন দেয়।২০ টাকায় পূর্ণ পৃষ্ঠার একটি বিজ্ঞাপন দিতে রাজী হয়ে গেল!
আমারে আর পায় কে। আমি যদি আরো ৪টা এরকম বিজ্ঞাপন পাই তাহলে আমার আয় হয়ে যাবে ১০০টাকা! কাজে আমি পাড়ার সব দোকানে গেলাম। নাপিতের কথা বললাম কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আর কেও বিজ্ঞাপন দিতে রাজি হল না!
যাহোক কয়েক সপ্তাহ পর আমি দ্বিতীয় সংখ্যা বের করলাম এবং মাত্র দুই কপি বিক্রি করতে সক্ষম হলাম!
আমি ঠিক করলাম এই কাজে পোষাবে না। আমার বন্ধুদের টিফিনের টাকা কমে যাচ্ছে!
আমার পত্রিকা ব্যবসার এখানেই ইতি!
আমার পত্রিকা ব্যবসার এখানেই ইতি!
আমি আর আমার ভাই এন্ডি নিয়মিতভাবে বয়েজ লাইফ পড়ি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভাজা ভাজা করে ফেলি। আমার প্রিয় অংশ হল শেষের দিকের ক্লাসিয়ায়েড বিজ্ঞাপনগুলো। সেখানে থাকতো এমন সি জিনিষের বিজ্ঞাপন যা আমি আগে কখনো ভাবিনি।আর মজার কথা হল সেগুলো ছিল সব অর্ডারি মাল। মানে ডাকযোগে টাকা পাঠিয়ে সংগ্রহ করা যেত (১৯৮০ সালে ইত্তেফাকেও এমন অনেক বিজ্ঞাপন ছাপা হতো)। একবার সেখানে একটি কিটের বিজ্ঞাপন ছাপা হয়েছে যা দিয়ে একটা ভ্যাকুয়াম ক্লিনারকে হোভার ক্র্যাফটে পরিণত করা যায়।
তবে, আমি সবচেয়ে বেশি আনন্দিত এবং চমকিত হতাম শেষ পাতার বিজ্ঞাপনে। যেমন সেখানে থাকতো কোন কোম্পানির শুভেচ্ছা বা ক্রিসমাস কার্ড বিক্রি করে দেওয়া। কাজটা খুব সোজা, কার্ড নিয়ে বাসায় বাসায় গিয়ে সেগুলো বিক্রি করা। যত বিক্রি তত পয়েন্ট। আর শেষে পর্যাপ্ত পয়েন্ট জমলে সেটা দিয়ে মনের মত খেলনা পাওয়া যায়।
আমার সামার ভ্যাকেশন চলছে কাজে আমি দ্রুত ওদেরকে লিখলাম কিছু স্যাম্পল আর ক্যাটালগ পাঠাতে। আমি একটা বাড়িতে গেলাম। প্রথম যে মহিলা দয়া পরবশ হয়ে দরজা খুললেন তাকে আমি স্যাম্পল আর ক্যাটালগ দেখালাম। উনি সব শুনে বললেন – ব্যাপারটা ভাল এবং তিনি অবশ্যই গ্রিটিংস কার্ড কিনতে চান। তবে, মুশ্কিল হচ্ছে ক্রিসমাস হচ্ছে ডিসেম্বরে আর এখন আগস্ট!
তার কথা শুনে আমি বুঝলাম আমি কতোটা বোকা! আমি গরমকালে শীতকালের ওয়াজ করার চেষ্টা করছি!!!
কাজে আমি আর কোন ঘরে গেলাম না। নিজের বাসায় ফিরে আসলাম।
আমার সামার ভ্যাকেশন চলছে কাজে আমি দ্রুত ওদেরকে লিখলাম কিছু স্যাম্পল আর ক্যাটালগ পাঠাতে। আমি একটা বাড়িতে গেলাম। প্রথম যে মহিলা দয়া পরবশ হয়ে দরজা খুললেন তাকে আমি স্যাম্পল আর ক্যাটালগ দেখালাম। উনি সব শুনে বললেন – ব্যাপারটা ভাল এবং তিনি অবশ্যই গ্রিটিংস কার্ড কিনতে চান। তবে, মুশ্কিল হচ্ছে ক্রিসমাস হচ্ছে ডিসেম্বরে আর এখন আগস্ট!
তার কথা শুনে আমি বুঝলাম আমি কতোটা বোকা! আমি গরমকালে শীতকালের ওয়াজ করার চেষ্টা করছি!!!
কাজে আমি আর কোন ঘরে গেলাম না। নিজের বাসায় ফিরে আসলাম।
এভাবে হবে না। আমাকে কার্যকর কিছু একটা বের করত হবে।
ডেলিভারিং হ্যাপিনেজ – মুনাফার সন্ধানে-৪: শুরুর শুরু!
প্রাইমারি স্কুলে আমার জানি দোস্ত ছিল গুস্তাভ। আমরা প্রায় সব কিছুই একসঙ্গে করতাম। একজন অন্যজনের বাড়িতে যাওয়া, বাবা-মাদের সামনে গান-বাদ্য করা, পরস্পরকে সিক্রেট কোড শেখানো কী নয়!
কোন একবার তার বাড়িতে গেছি। গুস্তাভ আমাকে একটা বই দেখাল-ফ্রি স্টাফ ফর কিডস। এই বইতে অসংখ্য অফার আছে যেগুলো বিনামূল্যের অথবা সর্বোচ্চ এক ডলারখরচ করলে পাওয়া যায়। এর মধ্যে ছিল ম্যাপ, ৫০-সেন্টের কলম, ফ্রি বাম্পার স্টিকার, অন্যান্য। সেগুলো পাওয়ার উপায়ও সোজা। নিজের নাম ঠিকানা লেখা একঠা কামে টিকেট লাগাতে হবে। আর ওদের ঠিকানায় একটা চিঠি লিখতে হবে ঐ পন্যটি পাঠানোর জন্য। ফ্রি হলে ওতেই সই। আর টাকা লাগলে খামে দিয়ে দেওয়া। আমি আর গুস্তাভ মিলে যতগুলো জিনিষ পছন্দ হয়েছে তার সবই পাওয়ার জন্য চিঠি লিখে ফেললাম।
গ্রিটিংস কার্ডে ধরা খাওয়ার পর আমি আবার বয়ে’জ লাইফ নিয়ে বসলাম। ওখানে ৫০ ডলারে একটি ব্যাজ (একটু বড় কোট-পিন) বানানোর কিটের কথা আছে। ঐ কিট দিয়ে যেকোন ছবিকে ব্যাজের মধ্যে বসিয়ে দেওয়া যায়। একটা ব্যাজ বানাতে সব মিলিয়ে খরচ হয় ২৫ সেন্ট।
কোন একবার তার বাড়িতে গেছি। গুস্তাভ আমাকে একটা বই দেখাল-ফ্রি স্টাফ ফর কিডস। এই বইতে অসংখ্য অফার আছে যেগুলো বিনামূল্যের অথবা সর্বোচ্চ এক ডলারখরচ করলে পাওয়া যায়। এর মধ্যে ছিল ম্যাপ, ৫০-সেন্টের কলম, ফ্রি বাম্পার স্টিকার, অন্যান্য। সেগুলো পাওয়ার উপায়ও সোজা। নিজের নাম ঠিকানা লেখা একঠা কামে টিকেট লাগাতে হবে। আর ওদের ঠিকানায় একটা চিঠি লিখতে হবে ঐ পন্যটি পাঠানোর জন্য। ফ্রি হলে ওতেই সই। আর টাকা লাগলে খামে দিয়ে দেওয়া। আমি আর গুস্তাভ মিলে যতগুলো জিনিষ পছন্দ হয়েছে তার সবই পাওয়ার জন্য চিঠি লিখে ফেললাম।
গ্রিটিংস কার্ডে ধরা খাওয়ার পর আমি আবার বয়ে’জ লাইফ নিয়ে বসলাম। ওখানে ৫০ ডলারে একটি ব্যাজ (একটু বড় কোট-পিন) বানানোর কিটের কথা আছে। ঐ কিট দিয়ে যেকোন ছবিকে ব্যাজের মধ্যে বসিয়ে দেওয়া যায়। একটা ব্যাজ বানাতে সব মিলিয়ে খরচ হয় ২৫ সেন্ট।
আমি আমার রুমে খুঁজে বের কললাম গুস্তাভের বাসা থেকে নিয়ে আসা বই। ভালমত ঘেটেঘুটে দেখলাম কেও ছবিওয়ালা ব্যাজ বানানোর কনো বিজ্ঞাপন দিছে কী না। পেলাম না।
কাজে আমি গুস্তাভের বই-এর প্রকাশককে একটা চিঠি লিখলাম। জানালাম আমি দীর্ধদিন ধরে ব্যাজের ব্যবসা করি। এটা বোঝানোর জন্য আমি আমার ছিটিল নিচে “Dept.
FSFK” লিখে দিলাম। ভাবটা আমার কোম্পানির কয়েকটা ডিপার্টমেন্ট আছে! (আসলে FSFK মানে হল ফ্রি স্টাফ ফর কিডস)। আমার অফারটা সহজ। বাচ্চারা নিজেদের ঠিকানালিখে যথাযথ টিকেট লাগিয়ে একটা খাম, একটা ছবি আর এ ডলার পাঠাবে। আমি ছবিটা কোট-পিনে লাগিয়ে দিয়ে ঐ খামে ভরে পাঠিয়ে দেব। প্রতি বোতামে আমার লাভ মাত্র ৭৫ সেন্ট!
কয়েকমাস পরে আমি ঐ চিঠির জবাব পেলাম। প্রকাশক লিখেছে পরের সংখ্যায় আমার বিজ্ঞাপনটি ছাপা হবে।
ব্যাস আমি বাবা-মার কাছে গিয়ে ১০০ ডলার চাইলাম। বললাম ৫০ ডলারে ঐ কিটটা আর ৫০ ডলারের মালমাত্তা কিনবো। তবে, এটা লোন। আমি ১০০টা অর্ডারের টাকা পেলে ঐ টাকা শোধ করে দিব।
বাবা-মা কিন্তু আমার নিউজ লেটার আর গ্রিটিংসকার্ডের গল্প জানে। ঐ খাতে আমার লাভের অংকও জানে। তারপরও তারা টাকাটা আমাকে দিয়েছেন কারণ এতকিছুর পরও স্কুলে আমার গ্রেড খুবই ভাল!
কয়েকমাস পরে আমি ঐ চিঠির জবাব পেলাম। প্রকাশক লিখেছে পরের সংখ্যায় আমার বিজ্ঞাপনটি ছাপা হবে।
ব্যাস আমি বাবা-মার কাছে গিয়ে ১০০ ডলার চাইলাম। বললাম ৫০ ডলারে ঐ কিটটা আর ৫০ ডলারের মালমাত্তা কিনবো। তবে, এটা লোন। আমি ১০০টা অর্ডারের টাকা পেলে ঐ টাকা শোধ করে দিব।
বাবা-মা কিন্তু আমার নিউজ লেটার আর গ্রিটিংসকার্ডের গল্প জানে। ঐ খাতে আমার লাভের অংকও জানে। তারপরও তারা টাকাটা আমাকে দিয়েছেন কারণ এতকিছুর পরও স্কুলে আমার গ্রেড খুবই ভাল!
কয়েক মাস পরে আমার বাড়ির ঠিকানা ছাপা হওয়া ফ্রি স্টাফ ফর কিডস এসে হাজির আমার বাসায়। নিজের বাসার ঠিকানা একটা সত্যিকারের বই-এ ছাপা হয়েছে। আমি বইটা নিয়ে বাবা-মাকে দেখালাম। তারপর অপেক্ষা করতে থাকলাম প্রথম অর্ডারের জন্য।
দুই সপ্তাহ পর আমি প্রথম একটা অর্ডার পেলাম। খামের মধ্যে একটি বার বছরের মেয়ের ছবি এবং একটি ১ ডলারের বিল! তারমানে আমি সত্যি সত্যি একটা ব্যবসায়ে ঢুকে পড়েছি। আমি মেয়েটির ছবি ব্যাজের মধ্যে বসিয়ে দিয়ে পাঠিয়ে দিলাম। আর ১ ডলারের নোটটা বাবা-মাকে দিয়ে দিলাম। ওনারা খুবই অবাক হলেন যে আমি একটা অর্ডারও পেয়েছি! গম্ভীরমুখে আমি নিজের রুমে এসে আমার হিসাবের খাতায় লিখলাম আমার ঋণের পরিমাণ এখন ৯৯!
পরেরদিন আমি দুই দুইটি অর্ডার পেলাম। আমার ব্যবসা রাতারাতি দ্বিগুন হয়ে গেল। এবং এক মাসের মধ্যে আমি ২০০ এর বেশি অর্ডার পেয়ে গেলাম। আমি আমার সব ঋণ শোধ করে ফেললাম এবং মিডল স্কুলের একজন ছাত্র হিসাবে যথেষ্ট টাকা পয়সা কামাতে শুরু করলাম।
কিন্তু একটা ঝামেলা শুরু হল। অর্ডার যত বেশি আসতে লাগল আমার সময় তত বেশি লাগছে। প্রতিদিন প্রায় ঘন্টাখানেক সময় দিতে হচ্ছে। যেদিন হোমওয়ার্ক আর পড়া বেশি সেদিন আর কাজ করা হতো না। আমি সেগুলো জমিয়ে রাখতাম সম্পাহান্তের জন্য। শনি-রবিবার আমার প্রায় ৪-৫ঘন্টা কোট-পিন বানানোতে চলে যেত। টাকাটা খুবই লোভনীয় কিন্ত শনি-রবিবার পুরো সময় বাসায় থাকাটা মোটেই সুখকর কিছু নয়। আমি তাই ৩০০ ডলার দিয়ে একটা সেমি-অটোমেটিক ব্যাজ বানানোর যন্ত্র কিনে নিয়ে আসলাম।
আমার মিডল স্কুলের পুর সময়টাতে এই ব্যবসায় আমার প্রতিমাসে ২০০ ডলার আয় হত। সবচেয়ে বড় কথা আমার স্থির বিশ্বাস হল মেইল-অর্ডারে, মানে দেখা-সাক্ষাৎ ছাড়াই ব্যবসা করা যায়!
পরেরদিন আমি দুই দুইটি অর্ডার পেলাম। আমার ব্যবসা রাতারাতি দ্বিগুন হয়ে গেল। এবং এক মাসের মধ্যে আমি ২০০ এর বেশি অর্ডার পেয়ে গেলাম। আমি আমার সব ঋণ শোধ করে ফেললাম এবং মিডল স্কুলের একজন ছাত্র হিসাবে যথেষ্ট টাকা পয়সা কামাতে শুরু করলাম।
কিন্তু একটা ঝামেলা শুরু হল। অর্ডার যত বেশি আসতে লাগল আমার সময় তত বেশি লাগছে। প্রতিদিন প্রায় ঘন্টাখানেক সময় দিতে হচ্ছে। যেদিন হোমওয়ার্ক আর পড়া বেশি সেদিন আর কাজ করা হতো না। আমি সেগুলো জমিয়ে রাখতাম সম্পাহান্তের জন্য। শনি-রবিবার আমার প্রায় ৪-৫ঘন্টা কোট-পিন বানানোতে চলে যেত। টাকাটা খুবই লোভনীয় কিন্ত শনি-রবিবার পুরো সময় বাসায় থাকাটা মোটেই সুখকর কিছু নয়। আমি তাই ৩০০ ডলার দিয়ে একটা সেমি-অটোমেটিক ব্যাজ বানানোর যন্ত্র কিনে নিয়ে আসলাম।
আমার মিডল স্কুলের পুর সময়টাতে এই ব্যবসায় আমার প্রতিমাসে ২০০ ডলার আয় হত। সবচেয়ে বড় কথা আমার স্থির বিশ্বাস হল মেইল-অর্ডারে, মানে দেখা-সাক্ষাৎ ছাড়াই ব্যবসা করা যায়!
মাঝে মধ্যে আমার পিন বানাতে ভাল না লাগলে আমি কাজটা আমার ছোটভাইদের দিয়ে দিতাম। ওরা মনের আনন্দে কাজটা করতো। শেষে আমি যেদিন মিডল স্কুল শেষ করলাম সেদিন আমি আনুষ্ঠানিকভাবে আমার ব্যবসা এন্ডিকে দিয়ে দিলাম। ভাবলাম আমি নতুন একটা ব্যবসা শুরু করব।
আমি তখনো জানতাম না এই ব্যবসাটা আমাদের একটা পারিবারিক ব্যবসা হবে। কয়েক বছর পরে এন্ডি ব্যবসাটা ডেভিডের হাতে দিয়ে দেয়। কিন্তু এর কিছুদিন পর বাবা একটা প্রমোশন পেয়ে হংকং-এ চলে যান। যাবার সময় বাবা-মা ডেভিডকেও সঙ্গে নিয়ে যায়। ফলে আমাদের পারিবারিক ব্যবসা চালানোর আরে কও রইল না।
আমাদের আসলে সাকসেশন প্ল্যানটা আরো প্রপার করার দরকার ছিল।
আমি তখনো জানতাম না এই ব্যবসাটা আমাদের একটা পারিবারিক ব্যবসা হবে। কয়েক বছর পরে এন্ডি ব্যবসাটা ডেভিডের হাতে দিয়ে দেয়। কিন্তু এর কিছুদিন পর বাবা একটা প্রমোশন পেয়ে হংকং-এ চলে যান। যাবার সময় বাবা-মা ডেভিডকেও সঙ্গে নিয়ে যায়। ফলে আমাদের পারিবারিক ব্যবসা চালানোর আরে কও রইল না।
আমাদের আসলে সাকসেশন প্ল্যানটা আরো প্রপার করার দরকার ছিল।
ডেলিভারিং হ্যাপিনেজ – মুনাফার সন্ধানে-৫: মোডেমের নতুন দুনিয়া
হাই স্কুলে আমার প্রথম দিন সবসময় স্মরণ করতে পারি। আমি ভেবেছিলাম সবকিছু একদিনে কেমন পাল্টে যাবে কিন্তু আমি যখন সেখানে গেলাম তখন সেরকম কিছুই দেখলাম না! অথচ আমি কিনা বড় হয়ে গেছি!
হাইস্কুলে আমার একটা কাজ হল এদিক সেদিক ঘুরে বেড়ানো। সেরকম একদিন স্কুল লাইব্রেরিতে ঘুরে বেড়ানোর সময় দেখলাম কোনায় একটি দরজা। আলাদা করে কখনো সেটা আগে চোখে পড়েনি। ভিতরে দেখলাম একটি কম্পিউটার ল্যাব। আলাপ হল কম্পিউটার সায়েন্সের টিচার মিজ গোরের সঙ্গে। মিজ গোরে আমাকে বরলেন আমি যেন তার প্যাসকেল ক্লাসে নাম লেখাই!
প্যাসকেল? সেটা আবার কী। এই কিম্ভুত নাম আমি আগে শুনিনি। মিজ বললেন প্যাসকেল হল একটি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ভাষা। এটি করলে পড়ে আমি নাকি জাতীয় এপি কম্পিউটার সায়েন্স টেস্টে ভাল করতে পারবো। এপি কী জিনিষ ঈশ্বর মালুম!তবে মনে হল এটি আমার কলেজে ভর্তিতে সাহায্য করবে। মিডল স্কুলে আমি নিজে কিছু বেসিক প্রোগ্রামিং শিখেছি এবং তা উপভোগও করেছি। কাজে আমি প্যাসকেল ক্লাসে নাম লেখাই আসলাম।
ক্লঅস শুরু হওয়ার পরেই আমি এর প্রেমে পড়ে গেলাম। আমার টিফিনের সময় আর স্কুল ছুটির পরের সময় কাটতে লাগল কম্পিউটার ল্যাবে। তখনো অবশ্য আমি জানতাম না দুই বছর পরে আমি সামার স্কুলে প্যাসকেলের প্রশিক্ষক হব। ল্যাবে আরো কয়েকজন রেগুলার ছাত্র ছিল এবং তাদের সঙ্গে আমার ঘন্টার পর ঘ্টা কেটে যেত।
ক্লঅস শুরু হওয়ার পরেই আমি এর প্রেমে পড়ে গেলাম। আমার টিফিনের সময় আর স্কুল ছুটির পরের সময় কাটতে লাগল কম্পিউটার ল্যাবে। তখনো অবশ্য আমি জানতাম না দুই বছর পরে আমি সামার স্কুলে প্যাসকেলের প্রশিক্ষক হব। ল্যাবে আরো কয়েকজন রেগুলার ছাত্র ছিল এবং তাদের সঙ্গে আমার ঘন্টার পর ঘ্টা কেটে যেত।
আমাদেরকে বিবিএস নামে একটা কিছুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হর। বিবিএস হল বুলেটিন বোর্ড সার্ভিস। ল্যাবের একটা কম্পিউটারের সঙ্গে একটা মোডেম লাগানো ছিল যা কিনা আবার টেলিফোন লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত।মানে এই মোডেম দিয়ে ঐ কম্পিউটারটি অন্য কম্পিউটারকে ডায়াল করতে পারতো এবং সেগুলোর সঙ্গে বাৎচিৎ করতে পারতো। লোকাল কল করে আমরা বিভিন্ন কম্পিউটারের বিবিএসে যুক্ত হতাম। বিবিসে মেসেজ দেওয়া যেত, বিজ্ঞাপনের সুযোগ ছিল আর ছিল ডাউনলোডের সুবিধা। আর করা যেত আলোচন বা বিতর্ক।
কিছুদিনের মধ্যে আমরা জেনে গেলাম লোকাল কলের বাইরেও কল করা যায় এবং আমরা তা করতে শুরু করলাম। সিয়াটল, মায়ামি কিংবা নিউইয়র্কের অপরিচিত লোকের সঙ্গে চ্যাট করা যে কত উত্তেজনার তা কেমন করে বুঝাই!
আমাদের সামনে এক নতুন দুনিয়া উন্মোচিত হয়ে পড়ল যা কিনা কয়েকদিন আগেও আমা জানতাম না।
আমাদের সামনে এক নতুন দুনিয়া উন্মোচিত হয়ে পড়ল যা কিনা কয়েকদিন আগেও আমা জানতাম না।
একদিন আমাদের মধ্যে কেও একজন বললো মডেমের লাইনটা খুলে সেখানে যদি একটা আসল টেলিফোন লাগানো হয় তাহলে কেমন হয়? একদিন টিফিন টাইমে যকন মিজ গোরে ছিলেন না তখন আমরা এই কাজটা করলাম এবং অবাক হয়ে দেখলাম টেলিফোনে ডায়াল টোন পাওয়া যাচ্ছে। আমরা বুজলাম আমরা যেকোন জায়গায় ফোন করতে পারি। কিন্তু কাকে করবো?
কেও 976 সম্পর্কে জানে কী না। টেলিভিশনে দেখা যায় এর পরে যেমন
976-JOKE এই নম্বরে ফোন করে কৈতুক শোনা যায়।
পরের দিনগুলোতে আমাদের কাজ ছিল এরকম নানান নম্বরে ফোন করা। সেই সময় আমাদের অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। সবচেয়ে ভাল হয়েছে কীভাবে বয়স বাড়িয়ে বলতে হয়!
কয়েকদিন পর যখন স্কুলে টেলিফোন বিল আসলো তখন মিজ গোরে জানতে চাইলেন আমরা কেও
976-7933 এ ডায়াল করেছি কী না। কারণ বিলে নাকি বলা হয়েছে মডেমের লাইন থেকে বিগত মাসে ৩০০ কল হয়েছে এই নাম্বারে।
উনি জানালেন যে উনি নিজে ঐ নম্বরে মোডেম দিয়ে ডায়াল করে দেখেছেন কিন্তু ঔ পাশে কোন কম্পিউটার নাই!
আমাদের তো স্বীকার করার কোন উপায় নাই। আমরা অবাক হয়ে পরস্পরের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলাম।
মিজ জানালেন উনি কম্প্লেইন করবেন বিল সম্পর্কে!
আমর আমরাও বুঝে গেলাম লাঞ্চ আওয়ারে আমাদের কম্পিউটার ল্যাবে আসা খতম!
উনি জানালেন যে উনি নিজে ঐ নম্বরে মোডেম দিয়ে ডায়াল করে দেখেছেন কিন্তু ঔ পাশে কোন কম্পিউটার নাই!
আমাদের তো স্বীকার করার কোন উপায় নাই। আমরা অবাক হয়ে পরস্পরের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলাম।
মিজ জানালেন উনি কম্প্লেইন করবেন বিল সম্পর্কে!
আমর আমরাও বুঝে গেলাম লাঞ্চ আওয়ারে আমাদের কম্পিউটার ল্যাবে আসা খতম!
ডেলিভারি হ্যাপিনেজ-৬ : মুনাফার সন্ধানে – প্রোগ্রামিঙের বাইরে
হাইস্কুলে আমার একমাত্র কাজ কিন্তু কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ছিল না। আমি ভাবলাম যতো বেশি বিষয়ে আগ্রহ পাবো তত আমার জন্য ভাল। কাজে নানান বিষয়ে আমি আগ্রহ খুঁজে বেরিয়েছি।
বিদেশী ভাষার কোর্স নিলাম কয়েকটা – ফরাসী, স্প্যানিশ, জাপানী এমনকী লাতিনও। শরীর চর্চ্চা ক্লাসে আমি নিলাম তরবারি চালানো! (এটি সপ্তাহে মাত্র একদিন হতো, এটাও মনে হয় কারণ)। সংগীতের ক্ষেত্রে নিলাম জ্যাজ সংগীত আর আর্টে নিলাম লাইফ ড্রয়িং (যারা জানে না তাদের জন্য বলে রাখা ভাল হাইস্কুলে এর সবই আসলে বাধ্যতামূলক)।
যোগ দিলাম দাবা আর ইলেকট্রনিক ক্লাবে। এর ফাঁকে শিখলাম টরে-টক্কা, মোর্স কোড। শুধু তাই নয়, হয়ে গেলাম সনদপ্রাপ্ত হ্যাম রেডিও অপারেটর। (আমেরিকান স্কুলের এই বিষয়টি আমি বেশ মনোযোগ দিয়ে দেখি। আমার ধারণা আমেরিকান সোসাইটিতে উদ্যোক্তা সৃষ্টির ব্যাপারটার পেছনে তাদের এই স্কুলিং-এর একটা বড় ভূমিকা থাকতে পারে। তবে সে অন্য প্রসঙ্গ-মুনির হাসান)।
পাস করার জন্য আমাদের ভলান্টারি কাজও করতে হয়। আমি একটা থিযেটার হাউসকে ভূতের বাড়িতে পরিণত করতে সহায়তা করলাম এবং হ্যালোউইনের আগের সপ্তাহে ট্যুর গাইডও হলাম সেখানে। ঐ ভূতের বাড়িতে ২০ মিনিটের ট্যুরের জন্য দর্শনার্থীরা আমাকে ১৫ ডলার দিত!!!
থিয়েটারে কাজ করে আমি খুব মজা পেয়েছি বিশেষ করে পর্দার পেছনে। আমি ছিলাম স্কুল থিয়েটারের লাইট অপারেটর। এছাড়া আমি একটা দুইটা নাটকে অভিনয়ও করেছি। আর স্কুল থিয়েটারের পারফরম্যান্সের দিন আলোক অপারেটর হিসাবে আমাকে টাকাও দেওয়া হতো!
এরকম একটি কাজ যেখানে কিনা সবাই মিলে সবার জন্য আনন্দের উৎস তৈরি করা হয় তা আমি উপভোগ করতে শুরু করি। এসব কাজের শেষে কিন্তু কোন সার্টিফিকেট বা টাকা পাওয়া যেত না কিন্তু থাকতো চমৎকার স্মৃতি এবং অভিজ্ঞতা। (দেশে যারা গণিত উৎসব বা এরকম কোন কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকে তারা এই আনন্দটা বুজতে পারে)
তবে, ঝামেলা হল ক্লাস নিয়ে। কারণ রেজিমেন্টেট ক্লাসের কারণে আমার এসব করতে সমস্যা হতো। তাই আমি একটা বুদ্ধি করলাম। আমি ক্লাসরুটিন দেখে কোর্স নিতে শুরু করলাম, কোর্স দেখে নয়। ফলে, এক বছর আমি মঙ্গলবারে সকালে কেবল একটা ক্লাস করতাম আর বাকী সময় আমার ছুটি! তারপর আমি স্যারদের বোঝানো শুরু করলাম যদি আমি টেস্টে বাল করতে পারি তাহলে আমার উপস্থিতির বিষয়টা যেন স্যাররা পাত্তা না দেন।
হোমওয়ার্ক করার ক্ষেত্রে ও আমি সৃজনশীল পদ্ধতি বের করতাম। যেমন শেকসপিয়ার ক্লাসে আমাদের একটা হোমওয়ার্ক ছিল সনেট লেখা। সনেট হল ১৪ লাইনের কবিতা যার একটা বাদ দিয়ে পরের লাইনের সঙ্গে একটা সম্পর্ক। তো, আমি করলাম কি সনেটটা লিখলাম মোর্স কোডে!!! মানে এক লাইন ড্যাশ পরের লাইন ডট!!! আমি জানতাম স্যার হয় আমাকে ফেল করাবেন অথবা আমাকে এ প্লাস দিবেন। এবং তাই হল স্যার আমাকে দিলেন
A+++++++
মনে হয় সেদিনই আমি প্রথম শিখি, এমনকি স্কুলেও রিস্ক নিলে তার সুফল পাওয়া যায় এবং বাক্সের বাইরে চিন্তা করা যায়!
মনে হয় সেদিনই আমি প্রথম শিখি, এমনকি স্কুলেও রিস্ক নিলে তার সুফল পাওয়া যায় এবং বাক্সের বাইরে চিন্তা করা যায়!
আমার স্কুলে খারাপ দিনগুলোর একটি হল যেদিন কিনা আমাকে চুরি করার অপবাদ দেওয়া হল। আমার পকেটে অন্য একজনের একটা লাঞ্চ কার্ড পাওয়া গেল। লাঞ্চ কার্ড হলো স্কুল ক্যাফের ক্রেডিট কার্ড। আমি মোটেই মনে করতে পারলাম না কেমন করে সেটা আমার পকেটে আসলো। আমার মনে হল ক্যাফের ক্যাশিয়ার মনে হয় ভুলে আমার আগের জনের কার্ড আমাকে দিয়েছে এবং আমি অন্যমনষ্কভাবে সেটা পকেটে ঢুকিয়ে ফেলেছি।
আমাকে হাজির হতে হল একটি বিচারে। স্কুলের প্রেসিডেন্ট ও ফ্যাকাল্টিদের সামনে আমি অকপটে আমার সকল কথা খুলে বললাম। কিন্তু কেও আমার কথা সত্যি বলে মানলোই না।
আমাকে ১ দিনের জন্য স্কুল থেকে সাসপেন্ড করা হল এবং এই ঘটনা আমার স্কুল রেকর্ডে লিপিবদ্ধ করা হল।
যে অপরাধ আমি করি নাই, তার জন্য আমি সাজা পেলাম।
এই ঘটনা থেকে আমার শিক্ষা হল কখনো কখনো সত্য একাই যথেষ্ট নয় এবং সত্যের উপস্থাপন হল সত্যর সমান গুরুত্বপূর্ণ।
মজার ব্যাপার হল আমাদের স্কুলের মটো হল – সত্যই সুন্দর, সুন্দরই সত্য (ট্রুথ ইজ বিউটি, বিউটি ট্রুথ)”। জন কীটসের বিখ্যাত কবিতা “Ode on a Grecian Urn” ।
আমাকে হাজির হতে হল একটি বিচারে। স্কুলের প্রেসিডেন্ট ও ফ্যাকাল্টিদের সামনে আমি অকপটে আমার সকল কথা খুলে বললাম। কিন্তু কেও আমার কথা সত্যি বলে মানলোই না।
আমাকে ১ দিনের জন্য স্কুল থেকে সাসপেন্ড করা হল এবং এই ঘটনা আমার স্কুল রেকর্ডে লিপিবদ্ধ করা হল।
যে অপরাধ আমি করি নাই, তার জন্য আমি সাজা পেলাম।
এই ঘটনা থেকে আমার শিক্ষা হল কখনো কখনো সত্য একাই যথেষ্ট নয় এবং সত্যের উপস্থাপন হল সত্যর সমান গুরুত্বপূর্ণ।
মজার ব্যাপার হল আমাদের স্কুলের মটো হল – সত্যই সুন্দর, সুন্দরই সত্য (ট্রুথ ইজ বিউটি, বিউটি ট্রুথ)”। জন কীটসের বিখ্যাত কবিতা “Ode on a Grecian Urn” ।
সেদিন আমি মোটেই “সুন্দর” কিছু ফীল করি নাই
স্কুলে স্কুলিং একটিভিটির বাইরে আমার একমাত্র চিন্তা ছিল কীভাবে টাকা কামানো যায়। সে কথা পরের পর্বে।
No comments:
Post a Comment