ই-কমার্স ভিত্তিক কুরিয়ার বিজনেস সবে যখন শুরু, সময়টা ২০১৫ এর কথা। তখনই ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করে বেশ কয়েক রকম কুরিয়ার ব্যাগ, ফুড ডেলিভারী ব্যাগ বানিয়ে ফেললাম। ছোট ছোট কিছু কোয়ান্টিটির অর্ডার কমপ্লিট করে দিয়েছিলাম। ব্যাগ নিয়ে সাধ্যমত বেশ R&D ও করা হয়েছিল। তারপরে অন্য কাজের চাপে কুরিয়ার ব্যাগ কিংবা ফুড ডেলিভারী ব্যাগ খুব একটা বানানোর সুযোগ হয়নি। মার্কেটের গ্যাপটা আমি গ্র্যাব করতে ব্যর্থ হলাম।
কিছুদিন আগে একটা স্টার্টআপ দেখলাম দাবী করছে - বাংলাদেশে তারাই প্রথম ফুড ডেলিভারী ব্যাগ তৈরী করছে। দাবী করতেই পারে। ১ম কিংবা ২য় হওয়া নিয়ে আমার কোন মাথাব্যাথা নেই। এন্টি থেফট ব্যাগের প্রটোটাইপিংও আমি সেই ২০১৫ সালেই করেছিলাম। সেটার কমার্শিয়াল চায়না প্রোডাক্ট মার্কেটে আসে ২০১৭ সালে। দারাজের এক সেলারের ডাটা অনুযায়ী - ঐ ব্যাগটা সে এক সিজনে বিক্রি করেছিল প্রায় ৪ হাজার কপি! মার্জিন কত? আমি জানি কিন্তু উচ্চারণ করলাম না। আপনাদের কিছু না হলেও বিষয়টা মনে পড়লেই আমার মাথা ঘুরন্টি দেয়।
গুগল কিন্তু পৃথিবীর প্রথম সার্চ ইঞ্জিন নয়। তেমনি ফেসবুকও প্রথম সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নয়। এমন আরো শতশত উদ্যোগ আছে যারা মার্কেটের প্রথম না হয়েও মার্কেট লীডার। প্রথম হওয়াতে আসলে কোন কৃতিত্ব নেই। কৃতিত্ব আছে দ্রুততায়। আপনি কত দ্রুত আগাতে পারছেন সেটাই প্রতিযোগীতার বাজারে আপনার পজিশন ক্রিয়েট করবে। প্রথম হওয়া আকাঙ্খা আপনাকে নিছক একটা আত্মতৃপ্তি দিয়ে বরং কমফোর্ট জোনে ঠেলে দিবে। দিন শেষে কিন্তু ব্যালান্স শিটই সব।
এটা বলার উদ্দেশ্য হলো - আমাদের অনেক তরুণ তরুণী যারা উদ্যোক্তা হতে চায় তাদের মধ্যে "বাংলাদেশে প্রথম" টাইপের কিছু করার একটা প্রবণতা বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করা যায়। তাছাড়া তারা সব সময় ইউনিক আইডিয়া খোঁজে। জগতে কোন কিছুই ইউনিক নয় এটা বুঝতে যে সময় লাগে তাতে করে ফিরে এসে আবার শুরু করার সুযোগ কিন্তু থাকে না। নতুন বোতলে পুরোনো পানীয় বিক্রি করতে পারাই উদ্যোক্তার কৃতিত্ব। হাংরিপান্ডা স্টার্টআপের ব্যাগ করতে গিয়ে উদ্যোক্তার সাথে আলাপে কিছু মার্কেট ইনসাইট পেলাম। বিজনেস কিন্তু এখন আর ঢাকা কেন্দ্রিক নেই। ঢাকার মার্কেটের ইঁদুর দৌড়কে যদি আপনি বাই বাই বলে একটু আশেপাশে ছড়িয়ে পড়তে পারেন তবেই ব্যালেন্স শিটে পজেটিভ ইমপ্যাক্ট সৃষ্টি করার সুযোগ আছে ।
No comments:
Post a Comment