Pages

Monday, October 23, 2017

পাওয়ার অফ হ্যাবিট - চার্লস ডুহিগ



একটা বই পইড়া বুঝলাম, আমি নিজেরে যেইসব কঠিন কঠিন টার্গেট দেই এবং সেই গুলোরে নিয়মিত ফেইল করে গিলটি ফিল করে, , সেই গুলা আমার দোষ না, আমার অভ্যাসের দোষ।

বইটার নাম পাওয়ার অফ হ্যাবিট। লেখকের নাম চার্লস ডুহিগ। লেখক এক জন সাংবাদিক। পইড়া বুঝা যায় লেখক একজন সাংবাদিক ,রিসারচার না।

মোটামুটি গল্প বলে বলে উনি দেখাইছেন, মানুষ কিভাবে অভ্যাসের দাস হয় এবং অভ্যাস থেকে কিভাবে মুক্তি পাইতে হয়। ভয়ের কথা হইলো, বইটা পড়লে আপনি মোটামুটি বুঝে যাবেন,ফ্রি উইল বলে কিছু নাই। সব হইলো অভ্যাস । এবং আপনি আরো বুইঝা যাবেন, আসলে আপনি যেই সব জিনিষ অভ্যাস করে ফেলেছেন, সেই গুলোর থেকে মুক্তির সম্ভাবনা সামান্যই।

এবং সমাজ এবং প্রতিষ্ঠান গুলোও কিভাবে অভ্যাসের রুলস, স্ট্রাটেজি এবং রিসার্চের বদলে মূলত অভ্যাস দ্বারা চালিত হয়। এবং কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান গুলো কিভাবে, আপনার আচরণকে ম্যানিপুলেট করে আপনার মধ্যে অভ্যাস গুলো ঢুকায় দেয়-যার থেকে আপনি মুক্তি পাইতে পারেন না।

চার্লস ডুহিগ কিছু সিস্টেম টেকনিক দেখায়ছেন, কিভাবে অভ্যাস থেকে মুক্তি পাইতে হয় বইটা পড়লে বুঝবেন, এই গুলো করলেও, অভ্যাস থেকে মুক্তি পাওয়ার চান্স খুবই কম।

সো আপনেরা যারা সিগারেট ছাড়তে চাইতেছেন, আপনেরা যারা মনে করতেছেন, অবসরে বিশাল বিশাল রিচারস কইরা, বিশাল বিশাল বই লিখবেন কিন্ত তার বদলে টিভিতে সালমান শাহের সিনেমা দেখতেছেন আর গিলটি ফিল করতেছেন, আপনেরা যারা ডায়েট কইরা ওজন কমাইতে চান, আপনেরা যারা ফেসবুক ছাড়তে চান, আপনেরা যারা এক্সারসাইজ করতে চান কিন্ত করতে পারতেছেননা, আপনেরা যারা বিশাল প্রতিজ্ঞা করছেন- কালকের থেকেই আপনের জীবনে আমূল পরিবর্তন আনবেন, সরি টু ডিজাপয়েন্ট ইউ- এই সম্ভাবনা খুবই খুবই খুবই অল্প।

একে বারে নাই বলতেছিনা।
তো, এই বইয়ের শুরুতে এক ভদ্র লোকের কথা বলা হইছে, যার মাথার ব্রেইনের একটা অংশ একটা ভুল অপারশানের মাধ্যমে কেটে ফেলা হইছিল। এই অংশটা লজিক, রিজন এবং টেম্পোরারি মেমরির হিসাব রাখে। লোকটার নাম হইলো ইউজিন।

তো, এইটা কেটে ফেলার পরে ইউজিন আর কোন কিছু আর মনে রাখতে পারেনা। তার ১০ বছর আগের মেমরি আছে কিন্ত রিসেন্ট কোন মেমরি নাই। এবং সেইটা উনি জমাও রাখতে পারেন না।

মনে করেন, ইউজিনের সাথে যদি আপনার পরিচয় করায় দেয়া হয়, তো এক মিনিট মনে রাখবেন, কিন্ত এক মিনিট পরে সে আপনাকে চিনতে পারবেন না।

তো এই ইউজিনকে হ্যাবিট বা অভ্যাসের রিসার্চে একটা ইম্পরট্যান্ট মানুষ হিসেবে দেখা হয়। কারণ, এই লোকটাকে স্টাডি করে সায়েন্টিস্টরা অভ্যাস সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারছে।

তো সায়েন্টিস্টরা দেখলো, ইউজিন কিছু মনে রাখতে পারেনা কিন্ত তাকে যদি বলা হয়, কফি বানাও। সে পাক ঘরে গিয়া কফি বানাইতে পারতেছে। 

কেমনে কি ? যদি তার মেমরি , রিজন বা লজিক কাজ না করে সেইটা সে কিভাবে পারতেছে।

তো সায়েন্টিস্টরা তার মাথার মধ্যে স্ক্যানিং করে দেখলো। তার মাথার একটা অংশ, যেইটা হইলো বাসাল গ্যাংগালিয়া।(এইটা একটা সুন্দর ব্যান্ডের নাম হয়। কেউ ট্রাই করে দেখতে পারেন।:P) যেইটা মানুষের মস্তিষ্কের অনেক গভীরের অংশ , সেইটা এইটা কাজ করতেছে। বিজ্ঞানীরা অনেক আগেই সন্ধ করতো, বাসাল গ্যাংগলিয়া অংশটা মানুষের অভ্যাসকে নিয়ন্ত্রণ করে।

তো এর থেকে সায়েন্টিস্টরা বুঝতে পারলো, মানুষের অভ্যাস মস্তিষ্কের স্মৃতি এবং লজিক যেই অংশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তার সাথে সম্পর্কিত না। এইটার নিজের একটা অংশ আছে।সেই খানের নিয়ম মত মানুষ চলে। এবং সেইটা অনেক সময়ে, আপনের লজিক , রিজন এবং স্মৃতিকে চাপায় চলে।

অভ্যাস সম্পর্কিত রিসার্চে, ইউজিনের এই আচরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা ডিসকাভারি
কারণ সায়েন্টিস্টরা এর থেকে বুঝলো মস্তিষ্কের গভীরতম অংশ বাসাল গ্যাংগালিয়া. মানুষের অভ্যাসকে নিয়ন্ত্রণ করে। এবং এইটা লজিক এবং মেমরি দিয়া চালিত হয়না।

তার মানে হইলো, আপনে চাইলেই বা আপনের কাছে লজিকাল মনে হইলেই, বা ব্যাড হ্যাবিটের কারণে আপনার কোন খারাপ অভিজ্ঞতা হইলেও, এইটার থেকে মুক্তি পেতে চাইলেও আপনার অভ্যাসের উপরে আপনি নিয়ন্ত্রণ আনতে পারবেন না।

কারণ, এইটার জায়গাটাই আলাদা। এবং এইটা আপনার সরাসরি নিয়ন্ত্রণে নাই।
তো একেবারেই কি কোন উপায় নাই ? কেউ কি কখনো সিগারেট ছাড়ে নাই, এক্সারসাইজ ধরে নাই, মাদক থেকে মুক্তি পায় নাই, ফেসবুক থেকে বের হইতে পারে নাই।
পারছে।

কেমনে ? আগে বাড়েন।
তো অভ্যাস সম্পর্কে আলোচনায় সব চেয়ে ইম্পরট্যান্ট বোঝার জিনিষ হইলো, অভ্যাস কিভাবে কাজ করে।
এইটার তিনটা অংশ।
কিউ - রুটিন- রিওয়ার্ড।
এই টাকে বলা হয়, হ্যাবিট লুপ। নীচে এর একটা ছবি দেয়া হয়েছে।
কিউ -রুটিন- রিওয়ার্ড।

কিউ এর বাংলা কি হবে ? ধুর। জানিনা। কিউ হইলো কিউ। QUE । এই কিউ টা হইলো, একটা সংকেত।
মনে করেন, আমি সিগারেট খাই। (ছাড়ি, ধরি, ছাড়ি। এখন ছাড়া পিরিয়ড যাইতেছে)। তো আমার সিগারেটের কিউ হইলো, চা। 

মনে করেন, আমি চা খাইলে তার পরে যদি সিগারেট না খাই তো খুব খারাপ লাগে। আমার সিগারেট খাওয়ার একটা কিউ হইলো চা। আবার মনে করেন, আমি ভাত খাওয়ার পরে, একটা সুইট খেতে পছন্দ করি। এই খানে আমার সুইটসের কিউ হইলো ভাত খাওয়া।

আবার মনে করেন। সকালে উঠে আপনি ব্রাশ করেন। সো আপনার কিউ টা টাইম। সকাল। ঘুম থেকে ওঠা।
আবার মনে করেন, আপনি খুব ফ্রাস্ট্রেটেড হইলে, ফ্রিজ খুলে স্নাক্স খান। তো আপনার ফ্রাস্ট্রেসেন টা কিউ। আপনার ইমসনাল স্টেটটা কিউ। আবার আপনার কোন কাজ নাই। বিরক্ত। আপনি ফেসবুকে ঢুকলেন। আপনার বিরক্তিটা কিউ। 

আপনি বিকেল হলে নাস্তা করেন। এই খানে বিকেল টা কিউ।
মনে করেন, আপনি ঘুম থেকে উঠে জগিং করেন। সো সকাল টা আপনার কিউ।
মনে করেন, আপনি গাড়িতে উঠলে, মোবাইল খুলে ফেসবুক চেক করেন। তো, আপনার গাড়িতে ওঠা টা কিউ। তো বুজছেন তো কিউ কি ?

তো। নেক্সট হইলো রুটিন। রুটিন হইলো আপনি কিউ এর সিগনাল টা পেলে, যেই কাজ টা করেন। মনে করেন ফেসবুকে ঢুকলে প্রথমে লাল অংশে চেক করেন, কোন মেসেজ আসছে কিনা, লাইক পড়ছে কিনা। তারপরে হোমে যান। পড়েন। লাইক দেন। বন্ধ করেন। আবার ঢুকেন। এই যে কাজ গুলো করেন, এইটা হচ্ছে রুটিন।

রিওয়ারড হচ্ছে, আপনি যে রুটিন টা করলেন, তার ফলে আপনার ব্রেইনে কিছু সিগনাল যাবে, যেইটার ফলে আপনার মধ্য একটা সাটিস্ফেকশান ফিলিংস হবে। এইটা রিওয়ারড।
মনে করেন, সেইটা হইতে পারে, আপনি সিগারেট খাইলেন, আপনার নিকোটিন ঢুকলো, যেইটা আপনার শরীর ক্রেভ করতেছিল- এই আরজটা পূর্ণ হইলো।

মনে করেন, আপনি ফেসবুকে ঢুকলেন, আপনে দেখলেন, আপনার একটা বন্ধু মেসেজ দিছে। আপনার ব্রেইনের মধ্যে ডোপামিন রিলিজ হইলো। 

মনে করেন, আপনি চা খাইলেন। সুগার টা একটা টেস্ট দিলো। মনে করেন, আপনি মিস্টি খান, সেইটা মজা লাগলো। তো এইটা হইলো রিওয়ার্ড।

অভ্যাস সব সময়ে এই কিউ, রুটিন, রিওয়ার্ড ফলো করে। এই টাকে বলা হয় , হ্যাবিট লুপ।
অভ্যাস পরিবর্তনের প্রথম কাজ হইলো, এই হ্যাবিট লুপকে বোঝা। আপনি হ্যাবিট লুপের যে কোন একটা কে ডিজ্রাপ্ট করে হ্যাবিট লুপকে পরিবর্তন করতে পারবেন।
আপনি কিউ টাকে ইন্টেরপ্ট করতে পারেন, রুটিনকেও পাল্টাতে পারেন অথবা রিওয়ার্ডটাকে চেঞ্জ করতে পারেন। কিন্ত, বিজ্ঞানীরা বার বার বলছেন, অভ্যাসকে চেঞ্জ করা যায়, কিন্ত অভ্যাসকে সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে তার থেকে থেকে স্বেচ্ছায় বের হয়ে আসা খুবই কঠিন। যেই গুলো দীর্ঘ দিনের অভ্যাস, সেই গুলো প্রায় অসম্ভব।
বিজ্ঞানীরা কিন্ত এই অভ্যাসের কারণটাও ব্যাখ্যা করছেন। তারা দেখাইছেন, অভ্যাসের কারণে, কিছু কিছু কাজে আমাদের ব্রেইনকে কম খাটতে হয়। ফলে, আমাদের ব্রেইন কম এনার্জি নেয়। তাই আমাদের মাথার সাইজ ছোট থাকে, যেইটার কারণে মায়ের পেট থেকে আমাদের ন্যাচারল বার্থটা সহজ হয়। প্লাস কম এনার্জি খরচ হওয়ার কারণে, আপনার কম খাইলে চলে।

মনে করেন, প্রতিবার সকালে উঠে যদি আপনার চিন্তা করতে হইতো আপনি ব্রাশ করবেন কি করবেন না। অথবা আপনি যদি গাড়ি চালান, তাইলে চিন্তা করে দেখেন,প্রথমে গাড়ি স্টার্ট করা, গিয়ার, কাচ, ব্রেক, রিয়ার ভিউ মিরর এই গুলো সম্পর্কে আপনি কত সচেতন ছিলেন। ব্রেইনকে ফুল এলারট থাকতে হইতো। কিন্ত অভ্যাসে পরে, এই গুলো আপনি ইজিলি করেন। মানে, এখন আপনার ব্রেইনকেও কম খাটতে হয়। কিন্ত শুরুতে আপনার ব্রেইনকে অনেক খাটতে হতো, অনেক এনার্জি নস্ট হতো।

তাই, আপনার নিজের প্রয়োজনেই আপনার মন অভ্যাস সৃষ্টি করে। ব্রেইন আপনার মতই ফাঁকিবাজ,সে চায় সব কাজে শর্টকাট। এবং এক বার যখন এইটা সেট হয়ে যায় তখন সে আর এইটা থেকে বের হইতে চায়না। আপনার ব্রেইন জানেনা গুড হাবিট কি, ব্যাড হাবিট কি। তার কাছে সব হইলো সর্ট কাট। এনার্জি প্রিজারভেশান।
তো যাক,বাংলা টা খুব সিম্পল।
অভ্যাস আপনার জীবনের জন্যে প্রয়োজনীয়। এবং আপনার ব্রেইন অভ্যাস মেনে চলার জন্যেই ডিজাইন করা।
তো আপনি যদি অভ্যাস চেঞ্জ করতে চান সেইটা ব্যাড হ্যাবিট হোক আর গুড হ্যাবিট হোক, আপনি আপনার প্রবৃত্তির সাথেই যুদ্ধ করতেছেন। খুবই কঠিন।
অভ্যাস পরিবর্তনে, বিলিফ বা বিশ্বাস খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে, আপনি পারবেন।
এবং পাওয়ার অফ হ্যাবিটে পুরো একটা চ্যাপ্টার আছে, হ্যাবিট চেঞ্জ করতে, বিলিফ কি গুরুত্বপূর্ণ। ইউ নিড টু বিলিভ আপনে পারবেন। এইটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এই বইয়ে একটা জিনিষ আসে নাই, যেইটা ভিন্ন কিছু পড়াশোনা থেকে পেয়েছি- এইটা হইলো, প্যাশন বা ডিজায়ার। আপনার অভ্যাস চেঞ্জ করাটার ইচ্ছাটা তীব্র হইতে হবে। এবং আপনি যেই নতুন অভ্যাস দিয়ে, আপনি পুরাতন অভ্যাসকে রিপ্লেস করবেন, সেইটার ব্যাপারে প্যাশনেট না হইলে, আপনি কোন মতেই বাসাল গ্যাংগালিয়ার উপরে নিয়ন্ত্রণ আনতে পারবেন না।
তো এই যুদ্ধ কেমনে করবেন ? 

ওয়েল চান্সেস আর, আপনি হেরে যাবেন। পারবেন না। অভ্যাস রয়ে যাবে। আপনি বেস্ট যেইটা করতে পারেন, সেইটা হইলো,,

এক। আপনার অভ্যাস টাকে রিপ্লেস করতে পারেন, নতুন একটা অভ্যাস দিয়ে।
দুই।, আপনের নিজের জন্যে নতুন একটা রিওয়ার্ড তৈরি করেন।
তিন। আপনার কিউ গুলো চেঞ্জ করেন।
চার। রুটিনটা পালটে নিয়ে নতুন রুটিন বানান।

মনে করেন, আমি আমার জীবনে অনেক বার সিগারেট ছাড়ছি, জাস্ট কিউটা পালটে। মনে কারণ, চা যেহেতু আমার সিগারেটের কিউ। আমি চায়ের বদলে, পানি খেলাম। সেইটা আমার হ্যাবিট লুপে ডিজ্রাপ্ট করে।

অথবা, আপনি ফেসবুকে আসক্ত। আপনি অফিসের ব্রেকে গেলেন। মন সিগনাল দিলো, ফেসবুক ফেসবুক। এইটা আপনার কিউ। আপনি তখন ফেসবুকে না গিয়ে, ইউটিউবে ইন্টারেস্টিং কিন্ত শিক্ষামূলক ভিডিও দেখলেন। টেড দেখার অভ্যাস করলেন। 

মানে রুটিন টা চেঞ্জ করলেন।
কিন্ত, আপনি যদি অতিরিক্ত অভ্যস্ত হয়ে যান তখন আপনার খারাপ লাগবে। অস্বস্তি লাগবে। মনে হবে ধুর কি হবে ?

ওয়েল তখন, আপনি একটা দুই মিনিটের টাইমার সেট করে ফেসবুকে যান এবং এই শেষ করার জন্যে নিজেকে একটা রিওয়ার্ড দেন। মনে করেন, এইটা যদি পারেন, তবে আপনি একটা আইসক্রিম খাইলেন। অথবা আপনার কাছের কাউকে বলেন, একটা রিওয়ার্ড ডিজাইন করতে।

সফল অভ্যাস পরিবর্তনের করার জন্যে পরিবারের, বন্ধুদের সাহায্য নেয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। বিদেশে অনেক অভ্যাস নিরাময় গ্রুপ আছে যারা সপ্তাহে এক দিন বসে, আলোচনা করে। নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে। অনেক গ্রুপ আছে যেই খানে, একজনকে আরেক জনের সাথে এসাইন করে দেয়।

আপনার কিউ হিট করছে। তো এখন রুটিনে না গিয়ে, বন্ধুকে কল দেন। ডিসকাস করেন। এই গুলো সিরিয়াস রিসার্চের ফাইন্ডিং। হেল্প নেন। একলা একলা পারবেন না। কাছের কাউকে সাথে নেন। সে যেন আপনার, কিউ রুটিন রিওয়ার্ডে ইন্টেরাপ্ট করে। এবং ইন্টেরাপ্ট করলে হবেনা, নতুন হ্যাবিট গড়তে হেল্প করে।

তো আবার বলি, 

১। অভ্যাস পরিবর্তন করতে হইলে, কিউ গুলো পরিবর্তন করেন। দেখেন আপনি কিসের থেকে কিউ পাচ্ছেন। সময়, মানসিক অবস্থা, কোন আচার, আচরণ সব কিছুই কিউ হতে পারে। আপনি দেখেন, আপনার অভ্যাসের কিউ গুলোকি। এই গুলোকে পরিবর্তন করেন।

২। রুটিন যেইটা চেঞ্জ করতে চান। সেইটা লিখে ফেলেন। যদি না লিখেন তাহলে, আপনার হ্যাবিটে যখন কিউ করবে তখন, বাসাল গ্যাংগালিয়া আপনার উপরে কন্ট্রোল নিয়ে ফেলবে। তখন যদি আপনাকে চিন্তা করতে হয়, রুটিন নিয়ে, তখন আপনি বাসাল গ্যাংগালিয়ার সাথে হেরে যাবেন। যদি আপনার রুটিন গুলো লেখা থাকে, তবে, আপনি সেইটা দেখে অনুসরণ করেন। সেইটা ফলো করেন।

মনে করেন, আমার ফেসবুকে না ঢোকার জনে রুটিনের মধ্যে আছে, ইউটিউবে কিছু ভালো লার্নিং ভিডিও দেখা, আছে টেড দেখা, আছে কিছু ভালো সাইটে যাওয়া, আছে কিছু ভালো ডকুমেন্টারি দেখা। আমি মোবাইলে এই ভিডিও গুলো ডাউন-লোড করে রেখেছি যেন, আমি কিউ পেলেই রুটিন টা পালটে নিতে পারি।

৩। রিওয়ার্ড তৈরি করেন। এমন একটা রিওয়ার্ড দেন, যেইটা আপনার মন ক্রেভ করে।
৪। পুরো পরিবেশ পালটে ফেলেন এবং অভ্যাস পরিবর্তন করতে পারবেন না ভেবে পরিবেশ সাজান। যদি আপনার অভ্যাস থাকে রাতে খাওয়ার পরেও, ফ্রিজ থেকে খুলে জাঙ্ক খাওয়া, তবে ফ্রিজ খালি রাখেন।
যদি অনলাইনে ঢুকে সময় নষ্ট করার অভ্যাস পাল্টাতে না পারেন, তবে স্মার্ট ফোন ছেড়ে ডাম্ব ফোন ব্যবহার করেন। খেয়াল রাখবেন, বাসাল গ্যাংগালিয়ার সাথে পাড়ার চান্স খুবই কম। সো, হারবেন ভেবেই জয়ের রাস্তা তৈরি করেন।
যাক, এইটা ৩০০ পাতার বই। এক স্ট্যাটাসে এইটার নিয়ে লেখার সম্ভব না। বইটা উচিত কারো না কারো ট্রান্সলেট করা।

কত দিন করতে হবে ?
মিনিমাম ৯৬ দিন। ইয়েস নতুন অভ্যাসটা আপনাকে ৯৬ দিন করতে হবে, নইলে সেইটা অভ্যাসে পরিণত হবে। একদিন ধুম করে বাসাল গাঙ্গালিয়া আপনাকে আবার পুরাতন অভ্যাসে নিয়ে যাবে। নাম্বার টা খেয়াল রাখবেন। মিনিমাম ৯৬ দিন। মানে তিন মাস।

এই বইটা পড়লে, আপনি বুঝবেন, অভ্যাস হয়ে গেলে যেহেতু এর থেকে মুক্তি নাই, তাই অভ্যাস ফরমিং এর সময়েই এই গুলো থেকে সতর্ক থাকা ভালো। বাচ্চাদেরকে শাসন করা এবং জ্ঞান দান করার চেয়ে ভালো অভ্যাস গড়ে তোলার জন্যে বাবা মায়ের সতর্ক থাকা উচিত ।

কারণ, ছোট বয়সে আপনি যদি ভালো অভ্যাস গড়ে তোলান সেইটা তাকে সারা জীবন হেল্প করবে। একদম ছোট বয়সেই, শিশুদের হাতে স্মার্ট ফোন দিলে বা তাকে কার্টুনের মধ্যে ডুবিয়ে রাখার মত খারাপ অভ্যাস দিয়ে গড়ে তুললে সে সারা জীবন সাফার করবে।

রাষ্ট্র, সমাজ এবং প্রতিষ্ঠানে কিভাবে অভ্যাস গড়ে ওঠে এবং রিসার্চ, লিডারশীপ এবং স্ট্রাটেজির বদলে জাস্ট অভ্যাসের তাড়নায় প্রতিষ্ঠান গুলো কিভাবে চলে, সেই গুলো এই বইটায় ডিটেল ভাবে এসেছে যাক, সেইটা অনেক বড় আলোচনা সেই খানে আজকে আর গেলাম না

বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গুলো কিভাবে এই কিউ,রুটিন এবং রিওয়ার্ড সিস্টেমকে ব্যবহার করে কঞ্জিউমারর হ্যাবিট গড়ে তোলে সেইটা পাওয়ার অফ হ্যাবিটে চার্লস ডুহিগ দেখাইছে।

কিন্ত এক মিনিট চিন্তা করে দেখেন তো, এই যে আপনি ফেসবুকে ঢুকলেন, উপরের লাল নটিফিকেশানে টিপ দিলেন, তারপরে এই লেখাটা পড়লেন, লাইক দিলেন, আপনের নিজের স্ট্যাটাসে গিয়ে দেখলেন বন্ধুরা লাইক দিছে। আপনার মাথায় ডোপামিন সিক্রেশান হইলো। আনন্দ পাইলেন। 

এই খানে কিউ কোন টা, রুটিন কোন টা আর রিওয়ার্ড কোনটা?

আর এই হ্যাবিট লুপটা যদি ধরতে পারেন, তো বলেন তো, আসলে আপনার কোন ফ্রি উইল আছে নাকি, আপনি জাস্ট ভেড়ার পালের মত
বাসাল গ্যাংগালিয়াতে জুকারবারগের তৈরি করা অভ্যাসের, দাসের মত বিহেভ করলেন।

No comments:

Post a Comment

Disclaimer

Disclaimer: All the information on this website is published in good faith and for general information purpose only. Some content i...