০১) ওয়ার্ক ফ্লোরকে ভাইব্রেন্ট রাখুন। নিত্যদিনের ছোট থেকে ছোট অর্জনকেও সেলিব্রেট করার অভ্যাস করুন। ভাল কিছু হলেই দাঁড়িয়ে তালি বাজিয়ে সেলিব্রেট করুন। কাজটা যিনি শেষ করেছে তার সাথে একটা ওয়ার্ম হ্যান্ডশেক করুন। হাগ করুন কিংবা পিঠ চাপড়ে বাহাবা দিয়ে দেন।
০২) ইমপ্লয়ীইদের জন্যে সুস্পস্ট ক্যারিয়ার গ্রোথ প্যাথ তৈরী করুন এবং সেটা তাদের সামনে উন্মুক্ত করুন। কেননা, কর্মী যদি জানে যে, সে আসলে কোথায় যেতে পারবে বা যাওয়ার সুযোগ আছে তাহলে সে তার ক্যারিয়ারের উন্নতির জন্যেই প্রতিষ্ঠানের জন্যে কাজ করবে।
০৩) "পটলাক" প্র্যাকটিস চালু করুন। পটলাক হলো সপ্তাহে একটা নির্দিষ্ট দিনে কোন ইমপ্লয়ীই অফিসের সবার জন্যে বাসা থেকে খাবার তৈরী করে আনবে। সবাই মিলে সেটা খাবে। গল্পগুজব হবে। খাবারের প্রশংসা করা হবে। একটা ফান পরিবেশ তৈরী হবে। এতে করে কর্মীদের মধ্যে একটা পরিবারবোধ তৈরী হবে। ফ্যামিলির বাইরেও তার একটা অফিস পরিবার আছে! এই বোধটা তৈরী হলে কর্মীরা আপনার জন্যে বাড়তি রেসপন্সিবিলিটি নিতে কখনো দ্বিধা করবে না।
০৪) কর্মীরাতো নিজেরা পটলাকের মাধ্যমে তাদের মধ্যে সম্পৃতি তৈরীর চেস্টা করলো তো কোম্পানির ম্যানেজমেন্টেওর তো কিছু করা উচিত! কখনো কোন কর্মী যদি বাড়তি সময় কাজ করে তাহলে তাদের নাস্তা বা ডিনারের ব্যবস্থা করুন। মনে রাখবেন সেই প্রাচীন প্রবাদ – পেটে দিলে পিঠে হয়। কর্মীর প্রতি এই বাড়তি কেয়ার তাকে লয়েল করতে এবং এই বাড়তি সময় কাজ করার জন্যে কোম্পানির প্রতি বিরক্তি দূর করতে বেশ কাজে দিবে।
সুযোগ থাকলে ট্রান্সপোর্ট ফ্যাসালিটি দিয়ে দিন। যদি নারী কর্মী হয় তাহলে এটা অবশ্যই করুন। প্রতিষ্ঠানের গাড়ি দিয়ে বাড়ি লিফট দিয়ে দিন।
০৫) কর্মীদের সব সময় গুড হেলথে এনকারেজ করুন। অফিসেই ব্যবস্থা করতে পারেন হালকা ব্যায়াম ও ইয়োগার। লংটার্ম বেনিফিটের জন্যে স্বাস্থ্যবীমার ব্যবস্থা করে দিন। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ্য থেকে বছরে ৩ বার ফ্রি মেডিকেল চেকআপের ব্যবস্থাও করে দিতে পারেন। আপনার প্রতিষ্ঠান যদি বড় হয় এবং এফোর্ড করতে পারেন তাহলে কর্মীর পরিবারের জন্যেও স্বাস্থ্যবীমার ব্যবস্থা করুন।
০৬) অফিসে একটা গ্র্যাটিটিউড জার্নাল বোর্ড তৈরী করুন। এতে করে কর্মীর সাথে কর্মীর এনগেজমেন্ট বাড়বে। এই গ্র্যাটিটিউড জার্নাল বোর্ডে একজন কর্মী আরেক জন কর্মীর থেকে কিভাবে উপকৃত সেটা লিখে এখানে ফরমালি তাকে ধন্যবাদ জানাবে। এতে করে পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহযোগীতার প্রবণতা বাড়বে।
০৭) সাপ্তাহিক, মাসিক ও বাৎসরিক পুরস্কার চালু করুন। কোন কর্মী ভাল করলে তাকে পুরস্কৃত করুন। ইমপ্লীয় অব দ্যা ইউক / মান্স এওয়ার্ড দিন। এচীভমেন্ট বোর্ডে তাঁর ছবি লাগিয়ে দিন। সাথে কিছু গিফট / ফাইনান্সিয়ার বেনিফিট দিতে পারেন। বাৎসরিক পুরস্কারের ক্ষেত্রে বিদেশ ভ্রমণের খরচ দিতে পারেন । এতে করে প্রতিষ্ঠানে ভাল কাজের একটা প্রতিযোগীতা শুরু হবে। সবার মধ্যে ভাল করার একটা আকাঙ্খা জাগ্রত হবে।
০৮) ইমপ্লয়ীই স্টক অপশন ESHOP বা রেভিনিউ শেয়ারিং চালু করুন। প্রোপ্রাইটরশীপ, পার্টনারশীপের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট এমাউন্টের রেভিনিউ শেয়ার করা যেতে পারে। আর লিমিটেড কোম্পানি হলে স্টক/শেয়ার দেয়া যেতে পারে।
০৯) অন দ্যা স্পট ইনটেনসিভ : ছোট ছোট মাইলস্টোন সেট করুন। অন দ্যা স্পট ইনসেনটিভ ঘোষনা করুন। বিষয়টা এমন যে, আজকে / নির্দারিত কাজগুলো নির্দিষ্ট ডেডলাইনের মধ্যে শেষ করতে পারলেই তাৎক্ষনিক পুরস্কার।
এটি হতে পারে একটি চকোলেট, প্রিংগেলস চিপস, কোন বই, কসমেটিক্স কিংবা ৫০০ টাকার একটা নোট। এই উপহারগুলো একটা নির্দিষ্ট জায়গাতে ভিজিবল করে রাখুন। কাজ শেষ করা মাত্রই কর্মীরা সেখান থেকে ইনসেনটিভ সংগ্রহ করে নিবে।
১০) স্পন্সর করুন : কর্মীর সাথে একটা চুক্তি করে নিতে পারেন যে, আপনি আগামী ৩/৫ বছর এই কোম্পানিতে কাজ করবেন। বিনিময়ে আপনার উচ্চ শিক্ষার জন্যে / ট্রেনিংয়ের জন্যে কোম্পানি স্পন্সর করবে।
১১) নিয়মিত কর্মীদের পরিবারের খোঁজখবর নিন। কর্মীদের সন্তানের জন্যে এডুকেশন খরচ / বইখাতা ইত্যাদি স্পন্সর করতে পারেন। এতে করে আপনি অন্য প্রতিষ্ঠানের থেকে কর্মীদের বাড়তি কিছু দিচ্ছেন। তাদের জীবন থেকে টেনশন কমাতে হেল্প করলেন ফলে তারা আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রতি লয়েল হবে। তাছাড়া জব সুইচ করার আগে হাজারবার ভাববে কেননা অন্য প্রতিষ্ঠানে এই সুবিধাগুলো আছে কি না? সেটাই হবে তাদের মূল বিবেচ্য বিষয়।
একটা ভাল কোম্পানি ভাল হয় কর্মীর গুণে আবার একটা সফল সম্ভাবনাময় ব্যবসাও ধ্বসে যেতে পারে কর্মীর জন্যেই। প্রতিষ্ঠান কেমন, কি পরিমান ভাল করবে সেটা নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানের কালচারের উপর। তাই সর্বাত্মকরকম ভাবে প্রতিষ্ঠানে নতুন কালচার তৈরী ও চর্চা করতে চেষ্টা করুন।
লেখা : Sajjat Hossain
No comments:
Post a Comment