Pages

Thursday, December 7, 2017

দ্য আর্ট অব সিম্পল কোয়েশ্চেন্স

ব্যবসা দুনিয়াতে বেশ আলোচিত একটা গুজবের কথা জানাতে চাই আপনাকেবড় লক্ষ্যকিংবাদারুণ আইডিয়ানিয়েই বড় বড় সফল কোম্পানিগুলোর যাত্রা শুরু হয় আবার তরুণ উদ্যোক্তাদের নিয়েও এমন মিথের গল্প শোনা যায়অমুক কিন্তু দারুণ আইডিয়া নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে”-এমন কথা হরহামেশাই শুনি আমরা মূলত, পত্রিকা কিংবা টিভি রিপোর্টে উদ্যোক্তা বা স্টার্টআপদের নিয়ে এমন ভাবে রিপোর্ট করা হয় যেন-‘দারুণ আইডিয়া নিয়ে কাজের জন্যই তরুণরা সফল বিষয়টা আসলে ভুল-মিথ দারুণ আইডিয়াগুলোর পেছনে আসলে একটাই কারন খুঁজে পাওয়া যায়, সরল প্রশ্ন দ্য আর্ট অব সিম্পল কোয়েশ্চেন্স গাই কাওয়াসাকির লেখা একটা ব্লগপোস্ট সেটাকেই বাংলাদেশ উপযোগি করে তোলার জন্য এই পোস্ট
স্টার্টআপ বাবল বলে যে টার্মটা আছে সেখানে যত সফল কিংবা কাজে সাফল্য পেয়েছেন এমন কোম্পানি তখনই সফল বলে বিবেচিত হয় যখন তাদের আইডিয়া অর্থ আয় শুরু করে। দারুণ আইডিয়া জেনারেশনের খুব সহজ একটা উপায় হচ্ছে, সরল প্রশ্ন করা!

তো, কি?

সবার কাছে স্মার্টফোন আছে, যেখানে ক্যামেরা আর ইন্টারনেট অ্যাকসেস আছে।’, “তো, কি?”, ‘তারা ছবি তুলে, ছবি শেয়ার করতে পারবে।’, “তো, কি?”, ‘আমরা এমন একটা অ্যাপ তৈরি করতে পারি যা কিনা ছবি শেয়ার করার জন্য ব্যবহার করা যাবে, লোকজনকে সেই ছবি রেটিং করার সুযোগ দেবে, কমেন্টস করা যাবে।’, “তো, কি?”, ‘ভায়োলা, দেয়ার্স ইনস্টাগ্রাম’! (গাই কাওয়াসাকি তার লেখায় অ্যাড্রিয়ান স্লাইওৎস্কির দ্য আর্ট অব প্রফিটাবিলিটি এই উদাহরণটি ব্যবহার করেছেন।)

এটা কি ইন্টারেস্টিং না?

উদ্যোক্তাদের ইন্টেলেকচুয়াল কিউরিওসিটি আর অ্যাকসিডেন্টাল ডিসকোভারি ইন্টেনশন এই ছোট প্রশ্নকে বড় কোন আইডিয়া পেতে সহায়তা করে। রে ক্রক নামের এক সাধারন সেলসম্যান তো ফাস্টফুডের ইতিহাসই বদলে দিয়েছিলেন! মাল্টি মিক্সার বিক্রি করতে রে। একবার এক রেস্টুরেন্ট থেকে আটটা মিক্সার অর্ডার করে, রে কৌতুহল বসে সেই রেস্টুরেন্ট ঘুরতে যান। এরপরে সেই রেস্টুরেন্ট ব্যবসার প্রতি এটাই আগ্রহী হয়ে উঠেন তিনি যে সেলসম্যানের চাকরি ছেড়ে দিয়ে সেই রেস্টুরেন্টে যোগ দেন। সেই রেস্টুরেন্ট এখন ম্যাকডোনাল্ডস! রে বয়স যখন ৫০,তখন সে ১৯৫৪ সালে এই কাজ শুরু করে। ১৯৭১ সালে রে ম্যাকডোনাল্ডসের সিইও হিসেবে অবসর নেন

এটাই কি সবচেয়ে ভালো পথ?

বর্তমান অবস্থা নিয়ে যারা হতাশ থাকেন, তারা এই প্রশ্নের মাধ্যমে কোন একটা সরল পথ খুঁজে বের করতে পারে। ফার্দিন্যান্ড পোর্শ্যে একবার বলেছিলেন, ‘শুরুর দিকে আমি যখন চারপাশে দেখছিলাম, কোথাও আমার স্বপ্নের অটোমোবাইল খুঁজে পাচ্ছিলাম না; তখনই আমি নিজে থেকেই কাজ শুরু করে দেই।’ স্টিভ ওজনিয়াক অ্যাপল ওয়ান বানানোর সময় বিশ্বাস করতেন কম্পিউটার আরও ভালোভাবে সাধারন মানুষের কাছে পৌছানো সম্ভব

আমরা কেন এটা করছি না?

স্টারবাক্সের শুরুটা ছিল এই সরল প্রশ্ন দিয়ে। হাওয়ার্ড শুলৎজ স্টারবাক্স নিয়ে বড় ব্যবসার পরিকল্পনা করার সময় ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকে তেমন সাড়া পান নি। সময় নিয়ে নিজেই স্টারবাক্স কোম্পানি কিনে নিজের মত করে স্টারবাক্স চেইন শুরু করেন তিনি
এটা তো সম্ভব, আমরা তাহলে কেন এটা করছি না?
গত শতাব্দীতে সত্তরের দশকে মটোরোলা পোর্টেবল ফোন উদ্ভাবন করে। তখন আসলে এই ধারণাই বাস্তব ছিল না যে ফোনের মাধ্যমে মানুষকে সংযুক্ত করা সম্ভব। এরপরের ইতিহাস তো সবাই জানেমার্টিন কুপার আর তার প্রকৌশলীরা মুঠোফোন দিয়ে যোগাযোগের ইতিহাসে নতুন চ্যাপ্টার যুক্ত করে ফেলেন। “if we build it, they will come”-এই তত্বকে বিশ্বাস না করাই ভালো

বড় মাছটা আসলে কোথায় দুর্বল?

বাজারে যে বড় মাছ ব্যবসা করে যাচ্ছে সে আসলে দুর্বল কোথায় তা নিয়ে সরল প্রশ্ন করলে অনেক সময় বড় আইডিয়ার ঘ্রাণ পাওয়া যায়। সাধারনত তিন অবস্থায় মার্কেটের বড় মাছটা দুর্বল ভাবা হয়। বড় মাছটা যদি শুধু একটা পথেই ব্যবসা করে তাহলে সে কোথাও দুর্বল এটা ভাবতে পারেন। আইবিএম রিসেলারদের মাধ্যমে কম্পিউটার বিক্রয় করতো, ডেল তখন নিজেই ডিরেক্ট সেলিং শুরু করে। বড় মাছের গ্রাহকরা যদি অসন্তুষ্ট থাকে তাহলে সেখানে নতুন ব্যবসা আসবেই। ব্লকবাস্টার স্টোরের ডিভিডি আনা-নেওয়ার ঝামেলা এড়ানোর জন্যই নেটফ্লিক্সের জন্ম। আবার বড় মাছটা যদি নতুন পন্য উদ্ভাবন না করে একটা উপায়েই চলতে থাকে। মাইক্রোসফটের অফিসকে অনেকেই গুগল ডক্সের বিকল্প ভাবে কিন্তু!
আমরা কিভাবে অনেক টাকার মালিক হবো?’, ‘কত টাকা আসবে?’-এধরণের প্রশ্নকে আসলে ব্যবসা করার সময় ভালো প্রশ্ন হিসেবে বিবেচনা করা ঠিক না। বড় বড় কোম্পানি কিন্তু আসলে কোন একটা সরল প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই পৃথিবীতে পরিবর্তন আনে। শুধু বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন আসলে ব্যবসায় সাফল্য আনে না।




No comments:

Post a Comment

Disclaimer

Disclaimer: All the information on this website is published in good faith and for general information purpose only. Some content i...