Pages

Thursday, December 7, 2017

ইন্টার্ন হউন রক স্টারের মতন

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার শেষের দিকে নিয়মের খাতিরে আমাদের ইন্টার্নশিপ নামের কি-জানি-কি একটায় যুক্ত হতে হয়। প্রচলিত ইন্টার্নশিপ মানে হচ্ছে একটা ব্যাংকে যাও, কয়েকটা কাগজ ফটোকপি করো, সিনিয়রদের স্যার-স্যার কর আর মাস তিনেক পর থিসিস পেপারের মত কিছু একটাতে সাইন করে মুক্তি!

আমাদের দেশের ব্যাংকসহ বিভিন্ন বড় বড় যে সব প্রতিষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ পায় সেখানে আসলে তেমন কর্ম পরিবেশ থাকে না। বেসরকারী ব্যাংকগুলোতে নিয়মের খাতিরে ইন্টার্ন নিলেও তেমন কাজের সুযোগও মেলে না।

ইন্টার্নশিপ মূল কথা হচ্ছে, কাজের ঘ্রাণ নেয়া। ইন্টার্ন হয়ে কাজ শেখার সবচেয়ে দারুণ বুদ্ধি হচ্ছে ইয়াং সিইও বেইজড কোন স্টার্টআপ কোফাউন্ডারের কোন কাজে যুক্ত হওয়া। আপনি ব্যাংকে কিংবা প্রতিষ্ঠিত কোথাও যুক্ত হলে সেখানে একটা টেমপ্লেটেড কাজে যুক্ত হয়ে যাবেন আপনি, কিন্তু ছোট অফিস-স্ট্র্যাগল করছে এমন কোন প্রতিষ্ঠান বা স্টার্টআপে কাজের সুযোগ মেলে অনেক। আবার বড় কোন টেলকোতেও কাজের সুযোগ পেলে লুফে নিন।

ইন্টার্ন হিসেবে কোথাও কাজের সুযোগ পেলে সেখানে আপনার ‘মার্ক’ রেখে আসার চেষ্টা করুন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে এই কাজটি সবচেয়ে অমনোযোগ দিয়ে করি আমরা। দেরি করে অফিসে যাওয়া, কাজে বিরক্তিবোধ প্রকাশ করা, নিয়মের তোয়াক্কা না করা প্রায়শই ইন্টার্ন হিসেবে আমরা নিজের পরিচয়ের সঙ্গে যুক্ত করে ফেলি।

“Oh, I’m just an intern, so this experience doesn’t really matter.”


আমাদের বেশির ভাগই ইন্টার্ন হিসেবে যোগ দিয়ে এই ভাবনাই ভাবি, যা কিনা সম্পূর্ণ ভুল। আপনার জীবন বৃত্তান্ত ভারী করতে ইন্টার্ন হিসেবে যতটা সম্ভব অনেক বেশি কাজ শিখুন। ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করার সময় ভুল করলে, কেউ বকবে না কিন্তু! পরে পেশাজীবনে কাজে ভুল হলে কিন্তু কেউ ছাড় দিবে না আপনাকে।

“What are we going to do without you?”


ইন্টার্নশিপের শেষ দিনে যেন বস আপনাকে বলে “What are we going to do without you?” আমি নিজে যখন ওকলাহোমা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সচেঞ্জ স্টুডেন্ট হিসেবে টলসা শহরের মেন্টাল হেলথ অ্যাসোসিয়েশন ও ফ্যামিলি অ্যান্ড চিলড্রেন সার্ভিসেসের সঙ্গে প্লেসমেন্ট ইন্টার্ন/স্টাফ হিসেবে কয়েক সপ্তাহ ছিলাম, তখন শেষ দিনে আমার দুই মেন্টরের কাছ থেকে আমি “What are we going to do without you?” লাইনটা আদায় করে নিয়ে ছিলাম। দুজনের সঙ্গে এখনও আমার ইমেইল প্রায় প্রতিদিনই তো কথা হয়, সপ্তাহে ৪/৫বার স্কাইপ মিটিংও হয়।

ভালো ইন্টার্ন হওয়ার যত বুদ্ধি

পোষাক পরুন অফিসের মত: আপনার ইন্টার্নশিপ যেখানে সেখানকার পরিবেশ অনুসারে পোষাক পরুন। অফিস কালচালারের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করুন। আপনার যদি টাকা না থাকে তাহলে বন্ধুর কাছ থেকে পোষাক ধার করুন! এই বুদ্ধি আমার না, গাই কাওয়াসাকি নামের এক ভদ্রলোক আছে তার বুদ্ধি এটা। আমার মত কোন রঙের কাপড় পরবেন তা নিয়ে কনফিউশন থাকলে সব সময় কালো রঙের উপরেই থাকা ভালো। কালোতে ভুল নাকি কম হয়? ২০০৯ সালে আমি প্যান-প্যাসেফিক সোনারগাঁও হোটেলে একটা চার দিনের সার্ভের কাজ করেছিলাম ইন্টার্ন হিসেবে। সেখানে কালো শার্ট-প্যান্ট আর জুতো দিয়ে কোন মতে পার পেয়ে গিয়েছিলাম।

রক স্টার হউন

কনসার্টে সবাই রক স্টারের গান শুনতে যায়, তার পারফরম্যান্স দেখতে চায়। ইন্টার্ন হিসেবে সেই ক্যারিশমা আয়ত্বে আনার চেষ্টা করুন না! অফিস ম্যানার, এটিকেট তো মানুষ জন্মের সময় নিয়ে আসে না, শিখে-শিখুন।

বসকে চিনেন তো?

আপনার যে ইন্টার্ন মনিটর তাকে ভালো করে চিনে নিন! তার নাম গুগল করেন, ফেসবুকে দেখেন। সে কোন কলেজ-কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তা জেনে নিন।

সময়ের আগে চলুন

ইন্টার্ন হিসেবে ৫-১০ মিনিট লেইট আমাদের অভ্যাসে পরিনত হয়ে যায়। আমার নিজেরও সময় নিয়ে হাজারও সমস্যা আছে, কিন্তু চেষ্টা করুন সময়ের আগে চলতে। দেরি হয়ে গেলে আসলে কোন ‘এক্সকিউজ’ই তখন কাজে আসে না। দেরি করলেই আপনি ডেড, লেট করেছেন তো ডেড-এটা ভাবুন।

নিজে থেকেই শুরু করুন

সব ইন্টার্নের কপালে যে ভালো ম্যানেজার পরে তা কিন্তু সত্য নয়। আপনি সেল্ফ-স্টার্টার হলে কোন বিপদে পড়ার সম্ভবনা নেই। ইন্টার্ন হিসেবে আপনার হয়তো জব ডেস্ক্রিপশন নির্দিষ্ট, কিন্তু তার বাইরে অনেক সময় পাবেন কিছু করতে। খালি সময়টা বসে না থাকে কিছু করুন, নতুবা বসের প্রিয় কোন বই পড়া শুরু করুন। ডেলিভারিং হ্যাপিনেস বইটা কি পড়ছেন?

সোশ্যাল মিডিয়াতে সাবধান

ইন্টার্ন হিসেবে এমন কোন ছবি কিংবা মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশ করবেন না যা কিনা আপনার অফিস বা আপনার বসের ক্ষতি করে। Don’t post about your internship! What happens in the office stays in the office.

সরাসরি কথা বলুন

অফিসে বিরক্তি আসলে বসকে সরাসরি জানানোর চেষ্টা করুন। নতুন কাজ চেয়ে নিন কিংবা স্কোপ দেখে শুরু করে দিন। Robert De Niro আর Anne Hathaway-এর দ্য ইন্টার্ন মুভিটা দেখেছেন? ডি নিরোর যখন অফিসে কাজ ছিল না সে নিজেই নিজের কাজ খুঁজে নিত, এতেই সে অফিসে সবার মন জয় করেছিল।

Yes, yes, yes and also yes!

“আপনি কাজটা করতে পারবেন?”-এমন প্রশ্নের উত্তর “Yes!!” বলা ছাড়া আর কোন উত্তরই শিখবেন না। এমন কি বডি ল্যাঙ্গুয়েজেও ‘না’বোধ প্রকাশ না পায়।

ইতিবাচক মানুষ হউন

‘আমার এটা চাই-ই চাই’, ‘অ্যাই পিয়ন, কফি দাও’-এসব বাক্য পরিহার করে চলুন। ইতিবাচক কথা বলা শিখুন।

-- Stay cool. Embrace weird.

(Click Here for Original Writing)



No comments:

Post a Comment

Disclaimer

Disclaimer: All the information on this website is published in good faith and for general information purpose only. Some content i...