Pages

Sunday, July 21, 2019

যেভাবে সময় ‘স্লো’ করবেন

ময় কি টিভি সিনেমার মতো স্লো বা স্পিড আপ করা যায়? যখন প্রেমিকার সাথে গল্প করেন, তখন ২/৩ ঘণ্টা কখন কেটে যা তা কি টের পাই আমরা? আমার পরীক্ষার হলে ৩০ মিনিটের কুইজ টেস্ট যেন মনে হয় ৫/৬ ঘণ্টা হয়ে গেছে।

যখন আমরা আনন্দে থাকি তখন যেন সময় উড়ে যায়। চোখের পলকেই ২ মিনিট ২ ঘণ্টা হয়ে যায়। আবার যখন আমরা অলস হয়ে বসে থাকি, তখন ৩ মিনিটও ৩ ঘণ্টা মনে হয় আমাদের। 
দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করছে আমাদের সময় স্লো না দ্রুত গতিতে ছুটছে। 

পাওলো কোহেলোর দ্য আলকেমিস্ট যারা পড়েছেন, তারা একটা ব্যাপার জানেন। পাওলোর ভাষ্যে, যখন মানুষ প্রতিদিনের সূর্য উদয়ের কথা ভুলে যায় তখন প্রতিদিনই একই দিনের মত মনে হয় আমাদের।আমাদের চারপাশের কত কিছুই না আমরা এড়িয়ে যাই। একটা রুটিন লাইফের অংকে আটকে থাকি আমরা। আমাদের প্রতিদিনই জীবন এতই এক রকমের যে আমাদের চোখ বন্ধ করে দিয়েও আমরা অফিসে বাড়ি থেকে পৌঁছে যেতে পারি। আমরা ধরেই নেই পৃথিবী বা আমাদের চারপাশ ভীষণ রকমের স্থির। আমরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়গুলো নজরেই আনি না। এজন্যই আমাদের মনে হয় Life is a blur!

শেষ কবে আকাশে সোনালি মেঘ দেখেছেন? আমি ব্যক্তিগতভাবে ভোরে উঠে সোনালি মেঘ দেখার চেষ্টা করি, সেটা একটা নেশাই কিন্তু!

শেষ কবে গোলাপের গন্ধ শুঁকেছেন? দেখি তো প্রতিদিন, এমন উত্তরটাই দেবেন অনেকেই। নাকের কাজ কি শুধু পারফিউমের গন্ধ নেয়া? গন্ধ আর ঘ্রাণের মধ্যে পার্থক্য করতে পারেন নাক দিয়ে?
আপনি যখন বেঁচে থাকা শিখে যাবেন, তখনই আপনার কাছে সময়টা স্থির মনে হবে।



পাওলো কোহেলোর দ্য আলকেমিস্ট যারা পড়েছেন, তারা একটা ব্যাপার জানেন। পাওলোর ভাষ্যে, যখন মানুষ প্রতিদিনের সূর্য উদয়ের কথা ভুলে যায় তখন প্রতিদিনই একই দিনের মত মনে হয় আমাদের।

আমাদের চারপাশের কত কিছুই না আমরা এড়িয়ে যাই। একটা রুটিন লাইফের অংকে আটকে থাকি আমরা। আমাদের প্রতিদিনই জীবন এতই এক রকমের যে আমাদের চোখ বন্ধ করে দিয়েও আমরা অফিসে বাড়ি থেকে পৌঁছে যেতে পারি। আমরা ধরেই নেই পৃথিবী বা আমাদের চারপাশ ভীষণ রকমের স্থির। আমরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়গুলো নজরেই আনি না। এজন্যই আমাদের মনে হয় Life is a blur!

শেষ কবে আকাশে সোনালি মেঘ দেখেছেন? আমি ব্যক্তিগতভাবে ভোরে উঠে সোনালি মেঘ দেখার চেষ্টা করি, সেটা একটা নেশাই কিন্তু!

শেষ কবে গোলাপের গন্ধ শুঁকেছেন? দেখি তো প্রতিদিন, এমন উত্তরটাই দেবেন অনেকেই। নাকের কাজ কি শুধু পারফিউমের গন্ধ নেয়া? গন্ধ আর ঘ্রাণের মধ্যে পার্থক্য করতে পারেন নাক দিয়ে?
আপনি যখন বেঁচে থাকা শিখে যাবেন, তখনই আপনার কাছে সময়টা স্থির মনে হবে।




Wednesday, July 10, 2019

মনে রাখার কৌশল ও বিজ্ঞান

মুখস্থ করে কত কিছুই না মনে রাখার চেষ্টা করি আমরা। মনে রাখা কি এতই সহজ? প্রতিদিন এত এত ইনফরমেশন আমরা মাথায় নেই যে, তার মাত্র ১ শতাংশ পুরো পুরি মনে থাকলে সবাই আমরা এলন মাস্ক হয়ে যেতাম মনে হয়। মনোবিদরা মনে করেন, স্মৃতি বা মেমরি হুট করে মনে আসার কোন বিষয় না, স্মৃতি তৈরি করতে হয়। আমরা যা শিখি, যা দেখি-তা আমাদের দীর্ঘস্থায়ী মেমরিতে পরিণত করতে পারলেই দীর্ঘদিন তা আমাদের মনে থাকে। নিউটনের তৃতীয় সূত্রের ব্যাখ্যা বা পিথাগোরাসের উপপাদ্যের ব্যাখ্যা মনে রাখার জন্য কতই না সময় দিয়েছি আমরা। এত কষ্ট কেন মনে রাখায়? প্রাক্তন প্রেমিকার পুরনো প্রেমের কথা তো সহজে ভুলি না আমরা অথচ অ্যাকাউন্টিং করতে গেলেই সব ভুলে বসে থাকি আমরা।

কেন ভুলে যাই তা নিয়ে দারুণ একটি ব্যাখ্যা পড়েছি। আমাদের দুর্বল মস্তিষ্কের জন্য আমরা কিছুই ভুলে যাই না, আমরা আসলে ভুলে যাই আমাদের মস্তিষ্ক বুঝতে পারে না কোন তথ্যের কেমন গুরুত্ব হওয়া উচিত?



আমরা চাবি কোথায় রেখেছি মনে রাখতে পারি না অনেকেই। এক্ষেত্রে খুব সরল একটি কৌশল হচ্ছে, চাবির অবস্থান আপনার দরজার আশেপাশে ঝুলিয়ে রাখলে আপনার মনে থাকবে সব সময় তা। এটা অনেকটা কম্পিউটার চালানোর সময় ‘স্টার্ট’ বাটনে ক্লিকের মতো। 

আপনি যদি বাটনে ক্লিক না করেন, তাহলে কি কম্পিউটার চালু হবে? মনে রাখার জন্য যে কোনও তথ্যকে আমাদের ভবিষ্যতে ব্যবহারের দিকটি মাথায় রাখা জরুরী। স্কুল কলেজে আমরা যা শিখি, শেখার সময় আমরা ভাবি এটা কি ভবিষ্যতে কাজে লাগবে? 

যেহেতু মনে মনে ভেবে নেই তথ্যটি কাজে লাগবে না, তাই সেই তথ্যটি আর কাজে আসে না আমাদের।
যারা শক্তিশালী মেমরির ধারক, তাদের দিকে খেয়াল করলে দারুণ একটি বিষয় দেখা যায়। তারা যে কোনও তথ্যকে গল্প, রং, আর মোমেনটা হিসেবে মনে রাখতে পারে। যে কোনও তথ্যকে অদ্ভুত কোন গল্প হিসেবে পরিণত করতে পারলেই সব মনে রাখা সম্ভব। 

অনেকের নাম ভুলে যাই আমরা, এক্ষেত্রে অদ্ভুত আর উদ্ভট কোন বিষয়ের সাথে সেই নাম ও ব্যক্তিকে যুক্ত করতে পারলে আমরা নাম মনে রাখা কোন বিষয়ই না। স্মৃতি শক্তি শরীরের মত, যত্ন নিতে হয়। স্মৃতি শক্তির জোর বাড়াতে হলে কৌশল শিখতে হবে। যারা মরে রাখার কৌশল মনে রাখতে পারে তারা বেশি মনে রাখতে পারে! -- Stay



দ্য আর্ট অব পিচ, স্পিচ না

VIA

বেঁচে থাকার জন্য সব সময়ই আমাদের ‘পিচ’ করতে হয়। পিচ শব্দটি বাংলা পরিমণ্ডলে বেশ নতুন হলেও প্রয়োগ বেশ পুরাতন। জীবনে যাই করেন না কেন, কোন না কোন সময় ‘পিচ’ করতে হয়। পিচের সরাসরি কোন বাংলা নেই। কিন্তু এটাকে ‘বিক্রয় সংশ্লিষ্ট যোগাযোগ কৌশল’ হিসেবে প্রকাশ করা যায়। কিছু বিক্রি করতে চাইলে আপনাকে পিচ করতেই হবে। আপনি হয়তো জানেনই না সেই ছোট বেলা থেকে পিচ করে আসছেন আপনি। একটি কলম বিক্রি কিংবা ইন্টার্ভিউ বোর্ডে ‘ইন্ট্রডিউস ইয়োরসেলফ’ প্রশ্নের উত্তরে আমাদের কলম বা নিজেকে বিক্রি করতে হয়, পুরো প্রক্রিয়াই পিচ।

জীবনটা আসলে হাজার হাজার পিচের একটি সিরিজ-মাত্র। প্রেমিকার সামনে কিংবা বসের সামনে পিচ করছেন, করতেই হবে।

বেশির ভাগ-ক্ষেত্রেই আমরা পিচ আর স্পিচের মধ্যে পার্থক্য করতে পারি না। স্পিচ হচ্ছে হাতি, আইমিন জাতির উদ্দেশ্য ভাষণ। ভাষণ দেয়া হয় ভাসিয়ে দেয়ার জন্য। আর পিচ হচ্ছে সরল অংক, দুই লাইনে ১৪০ শব্দে সব কথা শেষ। ১৪১ হলেও আপনি শেষ। বেশির ভাগ সময়ে আমরা ১৪১কে ছাপিয়ে ব্রায়ান লারার ৫০১ রানকে হারিয়ে দেই কথার বন্যায়।

আমার নিজের পিচের মাত্রা খুব ভালো না। যে কারণে নিজের জন্যই এই পোস্টটি লিখছি।

যেভাবে পিচ করতে হয় দারুণভাবে:

নিজের আগ্রহ না, অন্যরা কি চায় সেটাই সব যেকোনো কথার শুরুতেই আমরা, আমি অমুক-আমি তমুক; আমি এই করি বা “This is my business and here’s what we do” লাইন দিয়ে কথা শুরু করি। যা বেশ পচা একটা লাইন। এসব লাইন কেউ শোনে না। প্রথমেই শুরু করতে হবে, অন্যরা কি চায় তা নিয়ে। কারও কাছে নিজেকে বিক্রি করতে চাইলে তার অফিসের কোন সমস্যায় আপনার মত মানুষ দরকার তা নিয়ে শুরু করুন। কাউকে আপনার ব্যবসায় বিনিয়োগ করাতে চাইলে, তার বিনিয়োগ কেন নিরাপদ হবে তা নিয়ে কথা শুরু করুন।

কোন প্রতিক্রিয়া নাই মানে আসলে ‘না’

আপনার পিচে যদি খুব বেশি ভ্যালু, খুব বেশি পয়েন্টস থাকে-তাহলে ধরে নিতে হবে আপনার কথা কেউ শুনবেই না। আপনার কথা কেউ গায়ে নিবে না। গায়ে নিবে না মানে হচ্ছে আপনার কথা কেউ শুনছে না, আর তা হচ্ছে না। যখনই দেখবেন কেউ শুনছে না, তখনই আপনাকে থেমে যেতে হবে। একটু বিরতি দিয়ে অন্য কোনভাবে পিচ শুরু করতে হবে। গুগল সার্চ করতে হবে

যার সঙ্গে কথা বলছেন, যাদের পিচ করবেন তাদের সম্পর্কে কতটা জানেন? ৩০ সেকেন্ডের গুগল সার্চ করে দেখুন। যে ফুড ডেলিভারি ব্যবসা নিয়ে আগ্রহী না, তাকে ফুড ডেলিভারি ব্যবসায় বিনিয়োগের অনুরোধ কেন করবেন? সব কথা প্রথমেই নয়

পিচ প্রথম প্রেম না। সব কথা, সব কিছু প্রথম মিটিংয়ে বলা যাবে না। প্রথম ইমেইল বা টেক্সটে সব আইডিয়া শেয়ার করা ঠিক হবে না।

অ্যাভোয়েড ওভারসেলিং

এক বছরের মধ্যে পৃথিবীর সব দরিদ্রতা দূর করে দিব।
বোল্ড ভিষন ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বেশি কখনই না। Sell the dream. Don’t oversell the dream. সবকিছুতে সম্পর্ক আনুন

আপনি কিছু একটার মাধ্যমে যার সঙ্গে কথা বলছেন তার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করুন। সিএনজি ড্রাইভার যদি আপনার এলাকার হয়, তাহলে আপনার যাত্রা একটু দারুণ হয় না?

শর্ট ও শার্পShort and sharp is key.
তিন বাক্যে কথা বলা শেষ করুন! ১৪০ শব্দে সব বলা শিখুন। যত কম কথা, তত স্পেসিফিক, তত কাজের।
নিজেকে ফ্যান হিসেবে কল্পনা করুন

মনে করুন আপনি মার্টিন লুথার কিংয়ের ভক্ত। তার মাধ্যমেই আপনি অনুপ্রাণিত, তার ফলোয়ার আপনি। যাকে বলছেন সেও কিংয়ের ভক্ত। তাহলে বিষয়টা কেমন দাড়ায়? যাকে পিচ করছেন তার পছন্দ জানুন।
সব কিছু হাস্যকর-ভাবে সরল করুন

সরলভাবে যেকোনো কিছু করার চেষ্টা করে দেখুন তো? কত কঠিন লাগে? -


VIA

মাথার মধ্যে চলছে কী?





কোন এক বিখ্যাত মনীষীর ভাষ্যে, তাকে কোন কাজ দেয়া হলে ৫ ঘণ্টা তিনি পরিকল্পনা করেন, আর এক ঘণ্টা কাজ করেন। আমরা মনীষীর কথা একটু উল্টোভাবে আমাদের জীবনে আনি। আমরা কেন জানি খুব বেশি মাথায় চিন্তা করি। অ্যা লট অব টাইম!

চিন্তা, দুশ্চিন্তা, চাপ, হতাশা-সবই চলে আমাদের মাথার মধ্যে। এটাকে টেকনিক্যালি preoccupied mind বলে। এবং অদ্ভুতভাবে বলা যায়, আমাদের ৯৯ ভাগ চিন্তাই কোন কাজের না। উইলিয়াম জেমসের ভাষায় বলা যায়, আমরা আসলে যা চিন্তা করি, তা কি আসলেই চিন্তা?

ইদানীং আমি খুব বেশি মাত্রায় প্র্যাকটিক্যাল ফিলসফি নিয়ে জানার চেষ্টা করার চেষ্টা করছি। বিষয়টা Practical philosophy, practical knowledge, practical books, practical work, আর practical advice-এর মত বিষয়ে যুক্ত।

প্র্যাকটিক্যাল বিষয়টি প্র্যাগম্যাটিজম ফিলোসফিক্যাল ধারণার সাথে যুক্ত। ১৯শতকে আমেরিকায় প্র্যাগম্যাটিজম ফিলসফি নিয়ে চর্চা শুরু হয়। চার্লস স্যান্ডার্স পিয়ার্স প্র্যাগম্যাটিজম ফিলোসফিক্যালের জনক। পরবর্তীতে উইলিয়াম জেমস প্র্যাগম্যাটিজম ফিলসফিকে জনপ্রিয় করেন।
উইলিয়ামের বিখ্যাত একটি কথা আছে। কথাটি হচ্ছে, যে কোনও দুশ্চিন্তা বা স্ট্রেসের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হচ্ছে একটির চেয়ে অন্যটি বাছাই করা। বিষয়টি এমন, একটি কারণের বদলে অন্য কারণে মাথা খাটানো।

প্র্যাগম্যাটিজম ফিলোসফিক্যাল ধারণায় মন হচ্ছে একটি টুল। আমাদের মনকে আমাদের পক্ষে কাজ করানো উচিত, বিপক্ষে নয়। আপনার সাইকেল যদি আপনার হয়ে কাজ না করে, আপনি যেখানে যেতে চান সেখানে না নিয়ে গেলে কি করা উচিত? যারা মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ তৈরি করতে পারেন তারা বিশ্বাস করেন না এটা সম্ভব কিছু। তাদের দাবি, আমি এসব ছাড়া চিন্তা করতে পারছি না। 

প্র্যাগম্যাটিজম ফিলোসফিক্যাল ধারণায় মন নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে সাইকেল চালানোর মত একটা স্কিল। আয়ত্ত করতে হয়। শেখার চেষ্টা না করে কে কবে সাইকেল চালানো শিখেছে বলুন? মন নিয়ন্ত্রণ করার শিখতে হবে, চর্চা করতে হবে। অন্য কথায়, আপনি কি চিন্তা করবেন তা নির্ধারণ করার জন্য আপনার মনকে সেই মাপের শক্তিশালী হতে হবে।কি চিন্তা করবেন না-তা প্রশ্ন নয়, কি চিন্তা করবেন-তা মনকে নির্ধারণ করতে হবে।

মাথার মধ্যে কি ভাবছেন, তা নিজে ভাবছেন না আপনাকে ভাবছে-সেটা খেয়াল রাখতে হবে। এভাবে নিশ্চয় ভাবেন:

• “আমার বস কি ভাবছে?”
• “আমি যদি ভুল করি তাহলে কি চাকরি চলে যাবে?”
• “সে কি আমাকে ভালোবাসে?”
• “আমার মনে হয় সে আমাকে ভালোবাসে না।”
• “আমি ব্যর্থ হবই।”
• “আমার জীবন এমন কেন?”
• “আমার জীবন কেন এমন অসাধারণ, যেখানে অন্যরা খারাপ আছে?”
• “আমার যদি ক্যান্সার হয়?”
• “মাশরাফি কেন বিশ্বকাপ খেলছে?”
• “আমি তো কোন কিছুই শেষ করতে পারছি না। আমার অপরাধ কি?”

এই লিস্ট লেখা শুরু করলে শেষ করা যাবে না। এসব সব রিয়েল শিট। এসব চিন্তায় আমরা ‘লো ফিল’ করি। লো ফিল করলে আমাদের মন ভালো থাকে না।

আমার একটা প্রশ্ন আছে, এসব চিন্তার কোন প্র্যাক্টিক্যাল প্রয়োগ আছে? হ্যাঁ?

অদ্ভুতভাবে ৯৯ শতাংশ এমন প্রশ্নের কোন বাস্তবতা নেই। এসব চিন্তার কোন ব্যবহারিক দিক নেই। যে সব চিন্তায় ইতিবাচক ভাবনা তৈরি হয়:


  1. যেভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়। দুনিয়ার সব সমস্যাই আসলে উত্তর না পাওয়া প্রশ্ন। নিজের মস্তিষ্ককে আমাদের বেশি মাত্রায় সমাধানে যুক্ত করতে হবে। পৃথিবীর অনেক সমস্যায় এখনও আমাদের নাক গলানোর সুযোগ আছে কিন্তু!

  2. কোন কিছু বোঝা। বিগ ব্যাং কিংবা স্ট্রিং অপারেশন কি তা বোঝার চেষ্টা করেছেন কি?
    কিভাবে ইউজলেস থটস চিন্তা করা বন্ধ করবেন?
    অ্যাওয়ারনেস, এর বাইরে আর কোন কৌশল কি আছে?
    যখনই সাইকেল রাস্তা থেকে খাদের দিকে চলে যায় তখন আপনি কি করেন? সচেতন ভাবে সাইকেলের ঘাড় ধরে তাকে রাস্তায় নিয়ে আসেন না? এটাই করতে হবে।



বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস



July 15  বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস। একজন যুবকের দক্ষতা অর্জন গুরুত্বপুর্ণ বলেই এমন বিষয় নিয়ে বিশ্ব দিবস পালন করার প্রয়োজন হয়।

ইদানিং আমার কিছু শ্রেণীর মানুষের উপর বিরক্ত ধরেছে। এগুলো হলো, ফেসবুক বাঙালী মুসলমান, কিছু নারীবাদি ও একটি বড় অংশের তরুণ সমাজ। এই বাঙালী মুসলমান সমাজটি মনে করবে আজ তারা চাইলেই জ্ঞান-বিজ্ঞান, ক্ষমতায় এগিয়ে থাকতে পারত কিন্তু ইহুদী-নাসারার চক্রান্তের জন্য কিছু করতে পারলনা। কিছু নারীবাদি মনে করে, একমাত্র পুরুষের কারণে তারা জীবনে কিছু অর্জন করতে পারেনি, তা না হলে একেকটা মাদাম কুরী হয়ে যেত। আরেকটি হলো তরুণ সমাজ। এরা মনে করে মামা-চাচা থাকলে অথবা সরকার সাহায্য করলে তারা ফাটিয়ে দিত। কিন্তু সত্য কথা হলো অন্যর দোষ ধরা বাদ দিয়ে যদি ওই সময়টুকু নিজের দক্ষতা অর্জনে ব্যয় করতো তাহলে আজ তাকে হা-হুতাশ করতে হতো না।

এই দেশে লক্ষ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে যাদের পড়াশোনা মানেই একটা সার্টিফিকেট অর্জন। এরা মনে করে সার্টিফিকেটই জীবনের সব। এদের মধ্য আবার বড় অংশ ওই সার্টিফিকেট অর্জন করতে গিয়ে ওই সার্টিফিকেট সংশ্লিষ্ট পড়াশোনাটাও ঠিক মত করতে পারেনা। ঠিক মত শুধু একটি কাজই পারে, তা হলো অন্যর দোষ দেয়া। এই দেশে হাজার হাজার ছেলে মেয়ে রয়েছে অনার্স মাস্টার্স করেছে, অথচ নুন্যতম ইংরেজিও পারেনা, কম্পিউটারে দক্ষনা, কমিউনিকেশনে ভালনা। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়ের বা পরবর্তী সময়ে আড্ডা, ‍মুভি দেখা, ফেসবুকিং করাই জীবনের মুল্য উদ্দেশ্যে হয়েছে। কিন্তু চাকরীর মার্কেটের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেনি। গত বছর ভারতের একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের সিইও বলেছিলেন, আমরা চাকরী নিয়ে বসে আছি, অথচ দক্ষ ছেলে মেয়ে নেই। ভাইভাতে সহজ সরল বিষয়ের উত্তর দিতে পারেনা। আমাদের দেশে এই অবস্থা ভারতের চেয়ে আরও ভয়াবহ।

আচ্ছা টম হ্যাংকস এর কাস্ট অ্যাওয়ে সিনেমাটি দেখেছেন? ধরুন, টম হ্যাংকসের মত আপনি একা নির্জন কোন দ্বীপে গিয়ে পড়লেন, তাহলে আপনি কি করবেন? সিনেমার নায়কের মত কি বেঁচে থাকার চেষ্টা করবেন নাকি আত্মহত্যা করবেন? বেঁচে থাকুন আর আত্মহত্যায় করুন আপনাদের দুজনের জন্যই কিছু কথা বলতে চাই।

সম্ভবত ৭০-৮০ দশ‌কের সি‌নেমা হ‌বে, সাদাকা‌লো সিনেমা। সিনেমা‌তে নায়ক বলছে, এই দূর্মুল্যের বাজারে চাক‌রি পাওয়ায় ক‌ঠিন। এমন অসংখ্য সাদাকালো সিনেমা দেখা যাবে যেখানে নায়ক, মাস্টার ডিগ্রি অর্জন করেও বেকার ঘুরে বেড়ায়। আবার আমার কাছে ১৯০১ সা‌লের এক‌টি বাংলা বই আ‌ছে, যে বইয়ের ভু‌মিকায় লেখা আছে, এই দুর্মল্যের বাজারে কাগজের দাম বৃ‌দ্ধি পে‌য়েছে তাই বইয়ের দামও বৃ‌দ্ধি করার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। উল্লেখ্য বইয়ের দাম লেখা আছে ১ টাকা। প্রায় ২শত পৃষ্ঠার বই।

চাকরীর বাজার খারাপ, জি‌নিস পত্রের দাম বে‌শি এগু‌লো আ‌দি কাল থেকেই ছিল। যে‌দিন থেকে অর্থনী‌তি নামক শ‌ব্দের উৎপ‌ত্তি হয়েছে সে‌দিন থেকেই এই ঝামেলা শুরু হয়েছে। মাঝে মাঝে মনে হয় পৃথিবীতে যদি ১০০ কোটি মানুষ থাকত তাহলে হয়ত এত সমস্যা হতো না। কিম্বা এত মানুষ থেকেও যদি ধনী দরিদ্রের পার্থক্য না থাকত তাহলেও হয়ত এত সমস্যা হতো না।

ফেসবুকে নিয়মিত দেখি, চাকরি নাই, চাকরি চাই। এমনকি ইনবক্সেও কেউ কেউ চাকরির জন্য বলেন! কেউ কেউ বলেন, মামা চাচা নাই তাই চাকরি নাই। এই যে নাই নাই, হতাশার কথা যত বলবেন তত নিজেকে পিছিয়ে ফেলবেন। অমুক নাই, তমুকের দোষ এর কথা বলবেন, কিন্তু ততক্ষণে যদি নিজের দোষ দেখেন বা নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে সময় বের করেন তাহলে আপনার জন্য আরও ভাল, আপনি আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন।

আচ্ছা এই যে, এত এত ছেলে মেয়ে জব মার্কেটে জব করছে সবাই কি মামা চাচার জন্য এসেছে? যদি মনে করেন এসেছে তাহলে বড় ভুল বলছেন। মামা চাচা ছাড়া চাকরি পেয়েছে এমন লিস্ট যদি আপনাকে দিই আপনাকে এক্সএল নিয়ে বসতে হবে, ও এক্সএল হ্যাং করে বসবে। কথায় কথায় মামা চাচার কথা বলা মানে হলো, যারা মামা চাচা ছাড়া জব পেয়েছে তাদের ছোট করে দেখা। তাও ধরার খাতিরে ধরে নিলাম মামা চাচার বদৌলতে চাকরি পেয়েছে। মামা চাচা বলতে তো আর মামা চাচা না, মানে পরিচিত মাধ্যম। আপনি কি জানেন কমিউনিকেশন কি জিনিস? বর্তমানে কমিউনিকেশন এতটাই শক্তিশালী যে আপনার অন্য যোগ্যতাও অনেক সময় তুচ্ছ হয়ে যায়। আপনি কোন কাজে অদক্ষ, কিন্তু ভাল কমিউনিকেশনের কারণে আপনি অদক্ষ হয়েও ভাল জায়গায় চলে যেতে পারেন। আজ আপনি অদক্ষ, কিন্তু দুই দিন পর দক্ষ হয়ে উঠতে পারেন। কিন্তু আপনি দক্ষ, আপনার কমিউনিকেশন লেবেল ভাল না, তাহলে প্রচুর সুযোগই আপনি হারাতে পারেন। সময় এসেছে, কমিউনিকেশনকে সালাম দিন, কমিউনিকেশনকে গুরুত্ব দিন। কমিউনিকেশনও এক প্রকার দক্ষতা।

আরেকটি বিষয় আপনারা বলেন, মামা-চাচা। যে মানুষটি পরিশ্রম করে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা দাঁড় করিয়েছে, সে কি চাইবে, তার প্রতিষ্ঠানে আত্মীয়তার সুযোগে সব অদক্ষ ছেলে মেয়ে ঢুকে পড়ুক? এমন অদক্ষ ম্যানেজমেন্ট নিয়ে প্রতিষ্ঠান সাজালে সেই প্রতিষ্ঠান বেশি দিন টিকবে? মামা-চাচার হিসেব বাদ দিয়ে দক্ষতা অর্জন করুন।

দুজন বন্ধু। দুজনের ফ্যামিলি স্ট্যাটাস প্রায় একই রকম। দুজনের একাডেমিক রেজাল্টও কাছাকাছি। এর মধ্য একজন তার সাবজেক্টকে ভালবেসে সাবজেক্ট রিলেটেড আরও অনেক জ্ঞাণ অর্জন করেছে, নিজেকে আরও আপগ্রেড করেছে। আরেক বন্ধু ওই ভার্সিটিতে পাশ করতে যতটুকু পড়তে হয় ততটুকু পড়েছে, এর বাইরে শুধু মুভি দেখে কাটিয়েছে। রেজাল্টের বাইরে তার সাবজেক্ট রিলেটেড বা অন্য বিষয়ে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুলেনি। এখন আমাকে বলেন, এই দোষ কার? স্বাভাবিক ভাবেই যে বন্ধু নিজেকে যোগ্য করে তুলেছে সে ভাল পজিশনে আছে।

বেশির ভাগই পাশ করার জন্য পড়েন। পাশ করার জন্য পড়ার দিন শেষ। নিজেকে আপগ্রেড করতেই হবে। না হলে ওই মামা চাচার গাল গপ্প করে লাইফটা নষ্ট করতেই হবে।

আরেকটি বিষয় হলো চাকরীই কেন করতে হবে? ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসা করার কথা বললে বলবেন, টাকা নেই। এরপর বলবেন, গরীব মানুষ ব্যবসা করতে পারবনা। সব বড়লোকরাই ব্যবসা করে।

এই সব নাই নাই, হা হুতাশ থেকে বের হয়ে আসতে হবে। চারিপাশে গরীব থেকে পরিশ্রম করে এত বড়লোক হওয়ার উদাহরণ পাবেন যে সেগুলোকে উদাহরণ হিসেবে ধরতেও লজ্জা লাগবে। আশেপাশে প্রচুর মানুষ রয়েছে, প্রচুর। আপনি যখন নাই, নাই হা হুতাশ করে টাইম নষ্ট করছেন তখন অন্য কেউ পরিশ্রম করছে। কাজ করতে হবে। কাজের বিকল্প নেই। নিউজে এসেছে ক্ষমতাশালীরায় বিশ্বের বেশি সম্পদ দখল করে আছে। আমি বলি, আমরাই তাদের এই সুযোগগুলো দিচ্ছি। আমরা বিজনেসে নামছি না বলেই তারা সম্পদের পাহাড় গড়ছে। ভাই নামতে হবে। টম হ্যাংকস এর মত টিকে থাকবেন নাকি ভিতুর মত হেরে যাবেন সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জীবনে ঝামেলা থাকবেই। প্রথমে ১০০০ টাকা লাভ করবেন। এরপর ৫০০ টাকা লাভ করবেন। এরপর ৮০০ টাকা লস করবেন। আবার ৬০০ টাকা লস করবেন। এরপর হয়ত ৫০০০ টাকা লাভ করবেন। এতটুকু মনে রাখেন, এই দেশে বিজনেসের অনেক সুযোগ আছে। সেই সুযোগটা আপনাকেই খুঁজে বের করতে হবে। কাউরে বললে হবেনা, যে ভাই আমার কাছে ৫০০০০ টাকা আছে, কি বিজনেস করব? পথে নামতে হবে। পথে নামলে পথ চেনা যায়। আপনার ফ্যামিলি হয়ত শুরুতে আপনাকে টাকা দিবেনা। কোন ভাবে একবার যদি দেখায়ে দিতে পারেন যে আপনি বিজনেসে ভাল করছেন, দেখবেন সেই ফ্যামিলিই আপনাকে সুরসুর করে টাকা দিবে। তার জন্য রিস্ক নিতেই হবে। যদি চাকরিও করতে চান, তাহলেও শুরুতে ৭-৮ হাজার দিয়ে চাকরি কি জিনিস, বিষয়টা বুঝতে চেষ্টা করতে হবে। শিখতে হবে। চাকরির মার্কেটেও দেখেছি, এই বর্তমান সময়েও ভাল জায়গা থেকে বিবিএ করে ৬ হাজার টাকার বেতনের চাকরি শুরু করেছে। সেই মানুষই ৬ বছরের মাথায় ৬০ হাজারের উপর আয় করেন। ভাই শুরুটা করতে হবে। নাক শিটকানো বন্ধ করতে হবে। এর ওর দোষ দেয়া বন্ধ করতে হবে। মনে করতে হবে, টম হ্যাংকস এর মত নির্জন দ্বীপে পড়েছেন। আপনার কোন সঙ্গী নেই। এই যুদ্ধ নিজের সাথে নিজের যুদ্ধ।

এই যুদ্ধ যদি না করেন, তাহলে এই বিজ্ঞাপনের মত অ্যাসিসটেন্ট ফটোকপিয়ার হোন। এখন সময় এসেছে, সিরিয়াস হওয়ার। সিরিয়াস হোন। দক্ষতা অর্জন করুন।

Disclaimer

Disclaimer: All the information on this website is published in good faith and for general information purpose only. Some content i...