Pages

Thursday, August 8, 2019

জিরো এক্সকিউজ


আমরা কোন কাজ করতে গেলে মোটামুটি হাজারখানেক ‘কারণ’ সঙ্গে নিয়ে কাজ করি। কাজের ব্যর্থতা বা সাফল্যের হাজারো কারণ আমাদের সামনে থাকে। আমরা বড়দের কাছ থেকে এটা শিখি, আবার বড় মানুষেরা চারপাশের মানুষের কাছ থেকে এসব কারণ শেখে। আজ সকাল একটি পডকাস্ট শুনছিলাম। যেখানে বলা হচ্ছি, টেনিস বা পোকার কিংবা দাবা খেলায় খেলোয়াড়দের হারার পেছনে কোন কারণ থাকে না। পারফরমেন্স বা স্কিলে দুর্বলতার কারণে হারতে পারে খেলোয়াড়, কিন্তু বৃষ্টি বেশি ছিল বা অসুস্থ ছিলাম-এসব সস্তা কারণ সেখানে জমে না। কখনও শুনেছেন বিশ্বকাপ ক্রিকেটে হারার জন্য কারণ শুনে বাহবা পেতে কাউকে? ভুলের জন্য হারতে পারি কিন্তু অহেতুক কারণে হারা কখনই যুক্তির না। আবার হেরে এসব অহেতুক কারণ অনুসন্ধানও বোকামি।
যুক্তিসংগত কারণ নিয়ে একটু ঘাঁটাঘাঁটি করা যেতে পারে। বারবার যদি ম্যাচে কোন দল হারতে থাকে, তাহলে তার কারণ অনুসন্ধান করে নিতে হবে। কোনভাবেই বৃষ্টি বেশি-মাঠ খারাপ এসব কারণে মুড়ি ভাজা যাবে না।


প্রশ্নোত্তরের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কোরাতে আরও যা পড়তে পারেন:

Stay cool. Embrace weird.

Tuesday, August 6, 2019

নতুন হ্যাবিট তৈরিতে কেন সমস্যা হয়?


আমাদের নতুন নতুন হ্যাবিট তৈরি করতে বেশ সমস্যায় ভুগতে হয়। এই যেমন সকালে ঘুম থেকে ওঠা কিংবা প্রতিদিন জিমে যাওয়া-অভ্যাস আর হয়ে ওঠে না। এক্সারসাইজিং, বা মেডিটেশন যে কোনও অভ্যাস গড়ে তোলা বেশ কঠিনই মনে হয়। আমার চারপাশে এমন মানুষ দেখি যারা প্রত্যয়ী কিন্তু অভ্যাস আর গড়ে তুলতে পারেন না। ২০১৬ সালে আমি প্রথম জানতে পারি, কোন কাজ যদি টানা ২১দিন গড়ে তোলা যায় তা হলে তা একটি দারুণ অভ্যাসে পরিণত হয়।
আমরা জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে নিয়মিত যা করি তাই অভ্যাস হয়ে ওঠে। আবার কোন কোন কাজ সপ্তাহে করি-তাও অভ্যাসে পরিণত হয়। নিয়মিত মানে হচ্ছে প্রতিদিন যে কাজ করবো আমরা তাই কিন্তু অভ্যাসে পরিণত হওয়ার সুযোগ থাকে। নিয়ম শব্দটা অভ্যাসের সঙ্গে ভীষণভাবে জড়িত। আপনি যদি সকাল উঠতে চান, সেই চাওয়া যদি শুধুই চাওয়া থাকে তাহলে আপনি শেষ। চাওয়ার সাথে নিয়মের সম্পর্ক যোগ করতে হবে।
কোন কিছু প্রতিদিন করা মানে কিন্তু আমাদের সেই কাজটি নিয়ে বেশি ভাবনার সুযোগ থাকে না। এই যেমন দাঁত ব্রাশ করা, আমরা কি ভীষণ চিন্তায় পড়ি এই কাজ নিয়ে?
প্রশ্নোত্তরের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কোরাতে আরও যা পড়তে পারেন:

এক্সপার্ট হবেন, না বিগিনার?


আমরা কোন কাজে কিভাবে অভিজ্ঞ হই? কোন কাজ বার বার করার অভিজ্ঞতা থেকেই আমাদের অভিজ্ঞ হয়ে ওঠা। এই পথ-পরিক্রমায় আমাদের মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু বিশ্বাস তৈরি হয়। আমাদের নিজেদের সক্ষমতা, আমাদের দ্বারা কি সম্ভব, কি অসম্ভব-এসব আমাদের মধ্যে জন্ম নেয়। এখানেই মূল সমস্যা দেখা যায়, এসব বিশ্বাস আমাদের পেছন থেকে আটকে রাখে। কোন কাজ ঠিক মতো করাই আসলে একমাত্র উপায় না। যে বিশ্বাসের কারণে আমরা পথে যতটুকু গিয়েছি, বাকিটুকু একই বিশ্বাসের জোরে যেতে পারবো কিনা সেটা একটা প্রশ্ন থেকে যায়।

এক্সপার্ট আর মাস্টার শব্দ নিয়ে আমরা তেমন একটা মাথায় নেই না। আপনি কোন বিষয়ে এক্সপার্ট হতে চান কিংবা মাস্টার হতে চান তা নির্ভর করে আপনার মনের ওপর। মাস্টার হতে চাইলে আপনার কাজ শুরু করতে হবে বিগিনার্স লেভেল। মাস্টার হতে চাইলে এক্সপার্ট দৃষ্টিভঙ্গিতে আটকে থাকলে চলবে না। শুরু করতে হবে বিগিনার্স লেভেল থেকে।

জেন বৌদ্ধিক আদর্শের একটি কথা আছে শোশিন, shoshin (初心)। শোশিন মানে হচ্ছে বিগিনার্স বা নবিশ মন। যে মন সব নতুন কিছু গ্রহণ করতে পারে আর প্রাক্তন ধারণা থেকে মুক্ত।

বিগিনার্স মাইন্ডে অনেক সম্ভাবনা থাকে, এক্সপার্ট মাইন্ডের সুযোগ বেশ কম থাকে। বিগিনার্স লেভেলের কথা মনে করুন। আপনার প্রথম সাঁতার শেখা বা ক্রিকেট খেলার কথা মনে করুন, কিংবা ক্যারিয়ার বা পড়াশোনার শুরুর দিকে। তখন শেখার উপায় কি ছিল? তখন সামনে কতগুলো পথ খোলা ছিল? বিগিনার্স লেভেলে আমাদের সামনে অনেক সম্ভাবনার পথ খোলা থাকে।

নবিশ অবস্থায় আমাদের মন ভুলের ঊর্ধ্বে থাকে, কিন্তু এক্সপার্ট লেভেলে আমরা ভুল মেনে নিতে পারি না। বিগিনার্স লেভেলে আমরা নিজেরা নিজেদেরকে ভুলকে মেনে নিতে পারি। যেহেতু আমাদের ভুল করা সম্পর্কে তখন জড়তা থাকে না, তখন আমাদের ভালো করার সুযোগ থাকে। কিন্তু এক্সপার্ট লেভেলে চলে আসার পরে আমরা ভুল মেনে নিতে পারি না। তখনই গ্রোথ একটি পর্যায়ে আটকে যায়। তখন আমাদের মধ্যে ‘অপিনিয়ন’ বা ভাবনা তৈরি হয়। অনেক কিছুই আমরা মেনে নেই না। বিগিনারদের মত চিন্তা ভাবনা থাকলে আমাদের ঘোরাঘুরি করে নতুন করে জানার সুযোগ থাকে। নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে তখন আমরা নিজেরা নিজেদের আগ্রহী করে তুলতে পারি। শিশুদের দিকে তাকালে বিষয়টা দেখা যায়। শিশুরা যেমন সব জানতে চায়, সব শিখতে চায়-বিগিনার মাইন্ড হলো তেমনি একটি উপায়।

একজন এক্সপার্ট:
-কোন কাজ করার সঠিক পথটা জানে।
-নিজের সক্ষমতা সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী।
-আগের অভ্যাস, ধারণা থাকে যা নতুন কিছু শিখতে বাঁধা দেয়।
একজন বিগিনার:
-কাজ করার অনেক পথ সম্পর্কে জানতে পারে। কোনটি সঠিক, কোনটি বেঠিক হতে পারে।
-সে জানে যে সে অনেক কিছু জানে না।
-একটা খালি মন নিয়ে নতুন তথ্য ও ভাবনা গ্রহণের জন্য তৈরি থাকে।
এবার ভাবুন কে হতে চান?

Sunday, August 4, 2019

#HAPPINESSPROBLEM: নিজের অবস্থান বোঝানোর দরকার নেই



হারুকি মুরাকামির বিখ্যাত একটি লাইনের কথা মনে পড়ছে, জীবনের কিছু কিছু বিষয় আছে যা এতটাই জটিল যে কোন ভাষাতে তা প্রকাশ করা সম্ভব না। আমরা প্রায়শই নানা কারণে নিজের অবস্থান, নিজের কথা অন্যের কাছে বলার চেষ্টা করি। আসলেই কি সেই চেষ্টার কোন দাম আছে? #HappinessProblem সিরিজের অংশ হিসেবে লিখাটা লিখছি।
নানান পরিস্থিতিতে আমরা নিজের অক্ষমতা বা জড়তা অন্যদের কাছে বোঝানোর চেষ্টা করি। দিন শেষে আসলে কেউ আমাদের বিষয় নিয়ে ভাবে না। সবাই আসলে যার যার বিষয় নিয়ে ব্যস্ত। নিজের দিকেই ভাবুন না, অন্যদের কতটা কথা আপনি শোনেন? যতটুকু কাজের প্রয়োজন হয়, ততটুকুই আমরা শুনি-এর বাইরে তো আর আমাদের কোন কনসার্নই থাকে না। আমরা নিজের বেলায় নিজের কথা প্রকাশে যতটা গুরুত্ব দেই, অন্যের কথা শুনতে বা বুঝতে কি ততটা সময় দেই? পুরো দুনিয়াটাই এমন, নিজের অবস্থান বলতে সবাই আগ্রহী, কিন্তু অন্যকে বুঝতেই আমাদের যত সমস্যা।
আমরা নিজেদের ‘Why’ বিষয়টা যতটা না বোঝানোর চেষ্টা করি, অন্যেরটা কি শুনি? আমি অনেক সময় বুঝি না, আমাদের আসলে কেন নিজেকে অন্যের কাছে বোঝাতে হবে। যেটা ফ্যাক্ট বা রিয়েলিটি তা এমনিই প্রকাশিত-তা বোঝাতে বেশি কিছুর দরকার কি হয়? আমরা আসলে সবার কাছে ভালো সাজতে বা ভালো থাকতে নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করি। আমরা সব জায়গাতে নিজের গুরুত্ব বাড়াতে বা ফিট হিসেবে উপস্থাপন করতেই নিজের অবস্থান বোঝানোর চেষ্টা করি।
আমরাও ভুলে যাই যে, আমরা যখন অন্যের কথা বোঝার মানসিকতা রাখি না, তখন কেন অন্যের কথা শুনি বা নিজের কথা বলি? নিজেকে জ্বালিয়ে অন্যকে উষ্ণ রাখার কি দরকার?

যেভাবে সব সময় বিনয়ী থাকা যায়


আমার ইগো ধীরে ধীরে শক্তিশালী হচ্ছে, এভাবেই আমার এক বন্ধু নিজের সম্পর্কে আমাকে জানায়। 

ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে যত লাইক বাড়ছে, দিনকে দিন তার ইগো বড় হচ্ছে। কিভাবে ইগো কমানো যায়?
বেশ কঠিন একটি প্রশ্ন। ইগো বিষয়টার সঠিক ব্যবহারিক বাংলা বেশ কুয়াশাচ্ছন্ন। ইগো আসলে কি নেতিবাচক না ইতিবাচক তা নিয়েও যথেষ্ট বিতর্ক দেখা যায়। আসলে ইগো কে?

নিজেকে অন্যের সাথে কখনও তুলনা করা ঠিক না। তুলনা করার মন মানসিকতা আমাদের আনন্দ কেড়ে নেয়। আপনি যখন থেকে নিজেকে অন্যদের সাথে তুলনা করা শুরু করবেন, তখনই আপনি নিজেকে হারিয়ে ফেলবেন।

নিজেকে জীবনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানাতে হবে। জীবনের হাজারো দিক, কেউ এক ক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে অন্য ক্ষেত্রে সে সফল হতেই পারে। বিশ্বকাপ ফুটবলের কথা চিন্তা করুন, ফাইনালে যে দল হেরে যায় সে দলেরও কিন্তু একজন ক্যাপ্টেন থাকে। ক্যাপ্টেন কিন্তু সব সময়ই ক্যাপ্টেন।

আমরা খুব সাধারণ অর্থে টাকা পয়সা বা প্রভাব দেখে মানুষকে বিচার করি। যা আসলে সব সময়ই ভুল। অন্যের কথা মাথায় নিলেই সব সময় বিপদ।




স্ট্রেঞ্জারদের সঙ্গে গল্প করুন আইডিয়া পেতে





টম হ্যাংকসের বিখ্যাত সেই সিনেমার কথা আছে অনেকেরই। এক পার্কের পাশে বাস স্ট্যান্ডে বসে ফরেস্ট গাম্প নিজের জীবনের গল্প করছিলেন অপরিচিত সব মানুষের সঙ্গে। কোন কারণে ছাড়াই গল্প করে যাচ্ছিলেন গাম্প, আর মানুষের কিছুটায় ইচ্ছায় অনিচ্ছায় শুনছিলেন তার গল্প। কেউ কি টের পাচ্ছিল যে গাম্প তারকাদের তারকা তখন? আমরা চলার পথে সাধারণত অপরিচিত বা স্ট্রেঞ্জারদের সঙ্গে কথা বলতে চাই না। যেহেতু আমাদের সংস্কৃতিতেই আছে ‘অপরিচিত কারও দেয়া কিছু খাবেন না’, এই অবিশ্বাসের মধ্যে কি আর কথা বলা যায়? তার উপর নানান গুজব তো আছেই।

আমেরিকায় মিলেনিয়ালসদের একটু সিনিয়ররা পরামর্শ দেন অপরিচিতদের সঙ্গে গল্প করতে।
আমেরিকানরা এমনিতেই স্মলটকের জন্য বিখ্যাত। সেখানে অপরিচিতদের সঙ্গে গল্প জুড়ে দেয়ার কারণটা তেমন জানা যায় না। আসলে আমরা এখন যেভাবে ফেসবুক আর ইনস্টাতে আটকে আছি, সেখানে পাশের মানুষের খোঁজও নিতে চাই না আমরা। গল্প করার একটা কারণ মনে হয়, নতুন নতুন আইডিয়া পাওয়ার জন্য অপরিচিত মানুষরা দারুণ একটা সোর্স। নতুন স্টার্ট-আপ আইডিয়া কিংবা লেখার আইডিয়ার জন্য অপরিচিতদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন অনেক বিশ্লেষক। সিনেমার বিখ্যাত স্ক্রিপ্ট রাইটারদের নাকি এই অভ্যাস আছে। আমরা চলার পথে যেভাবে দুনিয়া দেখি, পরিচিত মানুষেরাও একইভাবে দুনিয়া দেখে। সেখানে নতুন অপরিচিত মানুষের ভাবনায় আমাদের মনোযোগ টানতে হবে, নতুন গানের মতো। একেকটি নতুন গান যেমন নতুন শব্দ ও বাক্য নিয়ে তৈরি হয়, তেমনি অপরিচিত মানুষরাও নতুন আইডিয়ার জন্য দারুণ উৎস।


কমিউনিকেশনে মন দিন, নির্ভুলের দিকে নয়


পৃথিবীটা সরল-ভাষায় সাদা-কালো নয়, এখানে পারফেক্ট বা নির্ভুল বলে আসলে কিছু নাই।আমরা কথা বলা কিংবা কোন কমিউনিকেশনে কি বলতে চাই তার চেয়ে কি বলছি তা শুদ্ধ অশুদ্ধ বা কতটা ঠিক সেটি নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করি। আমরা সঠিক-বেঠিক চিন্তা করতে করতে কখন যে বেশি কথা বলে ফেলি সেদিকে মনোযোগ দিতে পারি না। 

আমরা যদি আসলে কোন বিষয় বা বক্তব্য ১৪০ শব্দে বা ১৬০ শব্দে প্রকাশ করতে না পারি তাহলেই সেখানেই বেশি নয়েজ তৈরি হবে। মেসেঞ্জারের এই দুনিয়াতে আমরা প্রতি মুহূর্তেই বার্তা পাঠাই, আসলে বেশিরভাগ বার্তাই নয়েজ। কি বলছি, কি শুনছি-কোন কিছুতেই আমাদের নিয়ন্ত্রণ নাই। যা বলতে চাই, তার আগে পরে এত বিশেষণ, এত কথা বলি যে মূল কথাই হারিয়ে যায়। পত্রিকায় যেমন শিরোনামে পুরো রিপোর্টের সারমর্ম থাকে, কেউ পড়ুক না পড়ুক শিরোনাম দেখে ৪৬ শতাংশ বুঝে যায়, তেমনি হওয়া দরকার আমাদের বার্তাগুলো।

মূল কথা মূল রাখাই ভালো, কোন পারস্পেকটিভ যোগ করার কোন মানে নাই। এটা অনেকটা অংকের ২+২=৪ এর মত, বেশি বললেই বেশি নয়েজ আর তখনই অন্যরা কেউ বুঝবে না।

কমিউনিকেশনের আরেকটা বল ভুল হচ্ছে “I am right and you are wrong”, এটা মারাত্মক-খেয়াল রাখতে হবে। আমি মনে মনে বিশ্বাস করি, ছেড়ে দিয়ে যদি জেতা যায় তাহলে ছেড়ে দিন। আটকে আঁকড়ে ধরে যন্ত্রণার কোন মানে নেই।



নিজেকে সেরা মনে করার ডার্ক সাইড যত

আত্মবিশ্বাস সব সময়ই সাফল্যের একটি মাপকাঠি। ব্যক্তিত্বের জোর বা কোন কাজে কেমন দক্ষ আমাদের তা টের পাওয়া যায় আত্মবিশ্বাসের নানান ছবির মাধ্যমে। আত্মবিশ্বাস নির্ধারণ করে অন্যরা আসলে আমাদের সঙ্গে কেমন আচরণ করে, কিংবা আমরা কে কি কতটা দৌড়াতে পারি।
আত্মবিশ্বাসের বিপরীত, অহংকার বা অ্যারোগেন্সি। অদ্ভুত ভাবে আত্মবিশ্বাসের পুরোপুরি উল্টো অহংকার না, এটা অনেকটা একই স্কেলের ১৯ আর ২১ অংক। আত্মবিশ্বাস যদি ১৯ নম্বরে থাকে, তাহলে একটু সামনেই ২/৩ সংখ্যা পরে থাকবে অ্যারোগেন্সি। কেউই আসলে অ্যারোগেন্টদের পছন্দ করে না। অদ্ভুতভাবে বলা যায়, অ্যারোগেন্সির সঙ্গেও আত্মবিশ্বাস জড়িত। বিনয় বা স্থিরতা বিহীন আত্মবিশ্বাসকে বলা হয় অ্যারোগেন্সি। নিজেকে নিয়ে আত্মবিশ্বাস যখন নির্দিষ্ট মাত্রা ছাপিয়ে যায়, তখনই নানা বিপদ শুরু হয়। আর আমাদের চারপাশে তেমন মেন্টররাও থাকে না যে, যারা আমাদের ভুলগুলো ধরিয়ে দেবে। কখন যে উপরে উঠতে উঠতে আমরা রকেটের মধ্যে প্রাইম পজিশন থেকে আবার নিচে নামতে শুরু করি, তা টেরই পাই না আমরা।

নিজেকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসের অনেক ডার্ক সাইড আছে, যেটা আমাদের খেয়াল রাখা দরকার।
কমফোর্ট শব্দটি ভুলে যান ।

আত্মবিশ্বাস বা অ্যারোগেন্সির সঙ্গে কমফোর্ট শব্দটি ভীষণভাবে জড়িত। কমফোর্ট বিষয়টিই সব সময় খুঁজি আমরা। দামী স্যালারি, সুন্দর বাড়ী আর সাফল্যের দিকে ছুটতে আমরা নিজেদের আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলি। এসব অর্জনের পরে আমরা অ্যারোগেন্ট হয়ে যাই। কমফোর্ট জিনিষটা জীবনে আসা শুরু করলেই আমাদের গোলের দিকে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
আমরা সফল হওয়ার পথে কিংবা পরে নিজেরে জোর খাটাতে চাই। আমি শ্রেষ্ঠ, আমিই সব-এসব আমাদের মনের মধ্যে ঢুকে যায়। এসব ভাবনা আমাদের বিনয়ী হতে দেয় না, আমরা হোমো সেপিয়েন্স হওয়ার বদলে হোমো অহংকারী হয়ে যাই।


প্রশ্নোত্তরের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কোরাতে আরও যা পড়তে পারেন:

অ্যাডাপ্টিভ থিংকিং বা টপ গান পাইলটের মত চিন্তা করবেন যেভাবে


১৯৬৮ সালে প্রথম আমেরিকাতে অ্যাডাপ্টিভ থিংকিং বিষয়টার চর্চা শুরু হয়। সেবার মার্কিন বিমান বাহিনী ভিয়েতনামে বিমান হারাচ্ছিল অনেক। বিমান হামলা থেকে বিমান ও পাইলটদের বাচাতে অ্যাডাপ্টিভ থিংকিং শুরু করে তারা।
অ্যাডাপ্টিভ থিংকিং হচ্ছে যে কোনো পরিস্থিতিতে অপ্রত্যাশিত ঘটনার মধ্যে তড়িৎ সম্ভাব্য সিদ্ধান্তগুলো ভেবে বের করে বেস্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষমতা। যে কোনো ডগফাইটে পাইলটদের অ্যাডাপ্টিভ থিংকিংয়ের ওপর ভরসা করতে হয়। মুহূর্তের মুহূর্তে সেখানে দিক পরিবর্তিত হয়, তড়িৎ কিন্তু বেস্ট সিদ্ধান্ত না নিলে ঘটতে পারে মারাত্মক কোন দুর্ঘটনা।
আমার প্রতিদিন জীবনে একই স্টাইলে একঘেয়ে চলার চেষ্টা করি, যে কারণে আমাদের চিন্তাও ফিক্সড হয়ে যায়। বিষয়টা এমন যে, গাড়ি ডানে যাবে না বামে। এর বাইরে আমরা চিন্তা করতে পারি না। আমাদের চিন্তা গাড়ির মতই রাস্তার মোড়ের মত আটকে থাকে। হুট করে কোন ঘটনা ঘটলে তখন আমরা সিদ্ধান্তহীনতায় পড়ে যাই। অ্যাডাপ্টিভ থিংকিংয়ের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তহীনতা কাটানো যায়।
নিউরোসার্জনদের কথা চিন্তা করুন। অপারেশনের সময় হুট করে মস্তিষ্কের কোন একটি জায়গায় রক্তপাত শুরু হলে তখন তারা অ্যাডাপ্টিভ থিংকিংয়ের মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করে।
অ্যাডাপ্টিভ থিংকিংয়ের সঙ্গে think well যেমন জড়িত তেমনি think flexibly ও quickly বিষয়টি জড়িত।
অ্যাডাপ্টিভ থিংকিং বাড়ানোর ৩টি উপায় আছে:
কার্যকর পরিকল্পনা
নিয়মিত প্রোগ্রেসে মনিটর করা
চিন্তা শিফট করার দক্ষতা
প্রতিদিন নিয়মিত একটি নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি করে তার মতো করে সমস্যা সমাধানের চর্চা করার অভ্যাস করা প্রয়োজন আমাদের। ক্রীড়াবিদরা এমন করে প্র্যাকটিস করে। ডার্বি রেসের ঘোড়াদেরকেও বড় বড় লাউড স্পিকার-ওয়ালা ফেক শব্দের মধ্যে প্র্যাকটিস করতে হয়।
ডাইভারজেন্ট থিংকিং বিষয়টিও সঙ্গে সঙ্গে শেখা জরুরী। স্কুল কলেজে শেখানো হয়, কনভারজেন্ট থিংকিং। একই কাজ বারবার করে বাড়ির কাজ দেয়া হয়, সেখানে বুদ্ধি চর্চার সুযোগ কম থাকে।


কেন আমরা দুশ্চিন্তা করি (এবং তা কিভাবে বন্ধ করা যায়)

‘আমি আসলে যে কাজ করি তারচেয়ে আমি বেশি সময় ও এনার্জি নষ্ট করি কাজটির জন্য চিন্তা করে। আমার চেয়ে সরল জীবন যাপন করার কথা সেখানে আমি দুশ্চিন্তার বল খেলি প্রতিদিন।’

আমার এক পরিচিত মানুষের অভিযোগ এটা। এটা আসলেই কিন্তু সত্যি, আমরা আসলে যা চিন্তা করি তা কি চিন্তা না দুশ্চিন্তা? আমরা মাথার অনেকটা এনার্জি নষ্ট করি এসব দুশ্চিন্তার জন্য। চাপগ্রস্থ হওয়া ও দুশ্চিন্তা আমাদের জীবনকে কখন যে এলোমেলো করে দেয়া তা আমরা টের পাই না।

দুশ্চিন্তার অন্যতম খারাপ দিক হচ্ছে, দুশ্চিন্তা আমাদের বেঁচে থাকা থেকে জীবনকে ডাকাতি করে নিয়ে যায়। অর্থনীতিবিদদের হিসেবে, দুশ্চিন্তার আসলে অনেক বেশি অপরচুনিটি কষ্ট আছে। আমরা কাজ করার বদলে দুশ্চিন্তা করি, সেক্ষেত্রে কাজ করার চাইতে দুশ্চিন্তা করি আমরা। মনোবিজ্ঞানের ভাষায়, দুশ্চিন্তা হচ্ছে মানসিক ভাবে দুশ্চিন্তা হচ্ছে এমন কোন প্রচেষ্টা যেখানে আসলে সমস্যার সমাধানে কিংবা সমস্যা বলতে কিছু নেই। দুশ্চিন্তার কোন বাস্তবিক ফলাফল নেই, যা আমরা কখনই বুঝতে পারি না। তবে, অন্যদের দেখানোর জন্যও আমরা দুশ্চিন্তার শো অফ করে থাকি। হাই লেভেল অব স্ট্রেস আর অ্যাংজাইটি না থাকলে আমরা সফল না, এটাও সমাজে কেন জানি প্রতিষ্ঠিত। আপনি যখন দিনের বেশির ভাগ সময় দুশ্চিন্তার জন্য ব্যয় করবেন, তখন সত্যিকার অর্থের প্রোডাক্টিভ কিংবা সৃজনশীল হওয়া বেশ কঠিন।
মাইন্ডফুলনেস শেখার মাধ্যমে দুশ্চিন্তা কমানো যায়। আপনি এখন কি শ্বাস নিচ্ছেন কিনা সেটা একটু পরীক্ষা করুন, দুশ্চিন্তা অন্য দিকে চলে যাবে।

Disclaimer

Disclaimer: All the information on this website is published in good faith and for general information purpose only. Some content i...