Pages

Thursday, June 13, 2019

জীবনে আসলে সব কিছুই অর্জন করা সম্ভব..যেভাবে

জীবনে আসলে সব কিছুই অর্জন করা সম্ভব….যতক্ষণ না আমরা একবারে একটি করে কাজ শেষ করি। আমরা সবাই পেশাদার মাল্টিটাস্কার। এক হাতে ৫ কাজ নিয়ে না বসলে পেটের ভাতই হজম হয় না। বহু সফল ব্যক্তির বায়োগ্রাফি পড়ে দেখার পরে বুঝতে পারছি এটা আসলে সফল হওয়ার দারুণ এক টাইম-টেস্টেড কৌশল।
আমরা মানুষ, একমাত্র বুদ্ধিমান প্রাণী সম্ভবত যারা দুনিয়ার সব কাজ একসঙ্গে করার যোগ্যতা রাখি। আমরা প্রতিদিন নতুন নতুন কাজ শুরু করি পুরনো কাজ শেষ না করেই। অদ্ভুত।

হাজারও কাজ আমাদের দ্বিধার মধ্যে ফেলে দেয়। যে কারণে একটি কাজ করার সময় আমরা মনোযোগ স্থির রাখতে পারি না। আমরা মাল্টিপল গোল ঠিক, আর বিশ্বাস করি মাল্টি-টাস্কের মাধ্যমে সব করা সম্ভব। আসলে না।
আমাদের আসলে একটি নির্দিষ্ট মুহূর্তে একটি কাজ করা উচিত বা একটি বিষয়ে মন দেয়া দরকার, তা না করে একবারে দুনিয়ার সব কাজ নিয়ে বসি। এই অদ্ভুত সমীকরণে পিছিয়ে পড়ছি আমরা।

‘একবারে এক’ বা ‘ওয়ান থিং’ বলে যারা স্টার্ট-আপ সিইও বা ভালো ম্যানেজার আছে একটি কৌশল অনুসরণ করেন। জীবনের সব ক্ষেত্রেই একবারে এক কৌশলটি প্রয়োগের চেষ্টা করেন তারা।
আপনি একবারে কিন্তু ভালো চাকরি, সুস্বাস্থ্য, কিংবা ম্যারাথনে দৌড়ানো, বই লেখা, ইন্দোনেশিয়া ঘুরতে যাওয়া, কিংবা ব্যবসায়ে সফল হতে পারবেন না। কিন্তু পুরো জীবনে আপনি একটা একটা করে সব করতে পারবেন। বিষয়টা হচ্ছে প্রায়োরিটি দিয়ে একটা একটা করে কাজ শেষ করা। জীবনকে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে নিতে হবে। আমি এই কৌশলটা সম্প্রতি শিখেছি। ক্যারিয়ার, স্বাস্থ্য, পড়াশোনা, অর্থ আর রিলেশনশিপে আমার সব কিছু ভাগ করে নিয়েছি।

প্রতিটি ক্যাটাগরিতে আমি একটি একটি লক্ষ্য ঠিক করে তার জন্য কাজ করছি। আমি এক ক্যাটাগরিতে দুটো কাজ পাশাপাশি রাখি না আর। আমি একই সঙ্গে দুটো বই লেখার প্রজেক্ট মাথায় নিচ্ছি না। একবারে এক করে কাজ এগোচ্ছি। এর পাশাপাশি আমি একবারে একটি স্কিল শেখার চেষ্টা করছি। আমরা অনলাইনে বসলে একসঙ্গে ফটোশপ, ডিজিটাল মার্কেটিং আর অ্যাকাউন্টিং সব শেখা শুরু করি। যে কারণে শেষ পর্যন্ত আসলে কিছুই শেখা হয় না।
নিজের জীবনের প্রেক্ষিতে আমাদের এসব ক্যাটাগরি ভাগ করে নেয়া উচিত। যখন ইচ্ছে তখন আমরা আমাদের জীবনকে নানা ভাগে ভাগ করতে পারি। যদি ক্যাটাগরি অনুসারে ভাগ না করেন তাহলে জীবনে কাঠামো বা স্ট্রাকচার গড়ে তোলা সম্ভব না। পরিবার, কর্মস্থল ও জীবন তিনভাগেও ভাগ করে নিতে পারেন। যদি জীবনে কোন স্ট্রাকচার না থাকে তাহলে জীবনে শুধু কেয়োস বা মহাগ্যাঞ্জাম তৈরি হবে। এবং মনে রাখা দরকার আমাদের যে, গ্যাঞ্জামের সময় সব এক সঙ্গে গ্যাঞ্জাম শুরু হয়। যা খুব খারাপ।
ছবিতে দেখুন। একটা একটা সাফল্য বড় না এক সাথে সবখানে দৌড়ে কিছুই অর্জন বড়?


নিজের উত্তেজনাকে নিয়ন্ত্রণ করুনআমরা সাধারণ মানুষ তাই লক্ষ্য হিসেবে ঠিক করতে চাই, যা আমরা করতে চাই। আসলে তা করার আগে আমাদের মন ঠিক করতে হবে। ‘আমি সব করবো’, এই ভাবনার বদলে ‘আমার যা আছে তা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট’, ভাবতে শিখুন। নিজের মনকে একবারে এক কাজে যুক্ত হতে অভ্যস্ত করতে হবে। একসাথে দুইকাজকে সরাসরি না বলতে হবে। নিজের উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আপনি একবারে এক কাজ করা শিখতে পারেন। 
মাইন্ডফুলনেস বা স্টোয়িসিজম দারুণ বুদ্ধি হতে পারে এজন্য। এই দুই মতবাদ আমাদের বর্তমানে থাকতে শেখায়। একবারে এক কাজ করতে উৎসাহ দেয়।
এক কাজ করতে চর্চা করুনআজীবন মাল্টিটাস্কিং করে আসছি, এখন কি আমাদের আর সিঙ্গেল টাস্ক করতে আগ্রহ জন্মায়?আর প্রযুক্তির কল্যাণে তো একবারে এক কাজ করা অসম্ভব। এক্ষেত্রে যা করতে পারি:
-১৫মিনিট হেটে আসা যায় বিকেলে, মোবাইল কিংবা হেড-ফোন সাথে না নিয়ে
-পুরো একদিন মোবাইল ফোন এরোপ্লেন মুডে রাখা যায়
-যখন কোন মিটিং বা কনভারসেশনে থাকবেন কোনভাবেই মোবাইলে কথা বলবেন না
-মিটিংয়ে ইমেইল চেক করবেন না
বিং প্রেজেন্ট বা বর্তমানে থাকার সুবিধা হচ্ছে আমরা কম বিভ্রান্ত হতে পারি।
সব সময় জীবনে বড় করে সব দেখার চেষ্টা করুন। জীবন এখন হয়তো আপনার কাছে ১ মিনিটের ভিডিও, কিন্তু জীবনটা বড় সিনেমার মত। অনেকগুলো মুহূর্ত মিলে একটি বড় সিনেমা, একটি বড় জীবন। এক মুহূর্তে কখনই দুই কাজ করে ৩ ঘণ্টায় ৫টা করা সম্ভব নয়। You are the maker of your own life.




No comments:

Post a Comment

Disclaimer

Disclaimer: All the information on this website is published in good faith and for general information purpose only. Some content i...